‘কোটা সংস্কারে সমর্থন আছে, তবে আন্দোলনে অশুভ শক্তি ঢুকে পড়েছে’
৯ জুলাই ২০১৮ ১৬:১৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: কোটা সংস্কার প্রশ্নে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর দাবির প্রতি এখনও পূর্ণ সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
‘আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সমর্থন ও এর তিন মাসের মাথায় তাদের কর্মকাণ্ডকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে তুলনা’ করার বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি সোমবার (৯ জুলাই) সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখনও আমার পূর্ণ সমর্থন আছে। তবে সময়ের আবর্তে আন্দোলনকারীদের কর্মকাণ্ডে মহৎ প্রয়াসটি এখন আর নেই। একটা অশুভ শক্তি ঢুকে পড়েছে। তারা যেন ওভাবে কাজ (আন্দোলন) না করে।’
ভিসি বলেন, ‘তাদের দাবি প্রতি একদম সমর্থন আছে তবে তা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হতে হবে। মহৎ উদ্দেশ্য অর্জনের স্বার্থে হতে হবে।’
ড. আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ‘যে কোনো আন্দোলন হতে হয় সুনির্দিষ্ট রীতি-নীতি অনুসারে। একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করে মহৎ লক্ষ্য অর্জন করতে হয়। এখন সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাদের সঙ্গে হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী আছে। এরকম নিষিদ্ধ সংগঠনের মতো কর্মকাণ্ড করে তারা যেন হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে না দেয়। এটা হলো আমার আসল কথা।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৮ এপ্রিল শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। অবস্থানের পাঁচ ঘণ্টা পর পুলিশ লাঠিচার্জ করে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয়। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কোটা আন্দোলন চলাকালে গত ওইদিন মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা ভিসির বাসভবনে ঢুকে হামলা চালায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে ভিসি বলেন, ‘চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। যুগের প্রয়োজন কোটা সংস্কারের দরকার আছে। শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সরকারের প্রতি বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানাই।’
তবে এর তিন মাসের রোববার ( ৮ জুলাই) মাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কোটা আন্দোলনকারীদের কর্মকাণ্ডকে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড বলে উল্লেখ করেন।
ঢাবি ভিসি রোববার বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারীরা ফেসবুক লাইভে এসে জঙ্গিদের মতো করে ভিডিও বার্তা দিয়ে কর্মসূচি বা কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে। তাদের এমন মনোভাবের সঙ্গে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের মিল আছে। তারা কারা? কোন রাজনৈতিক অশুভ শক্তি, আমরা তা জানি না। সেটা বের করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের সহায়তা করব আমরা।’
তিনি বলেন, ‘অনেক সুস্পষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, একটি বড় অপশক্তি ক্রিয়াশীল আছে। উদাহরণ হিসেবে বলবো ফেসবুক লাইভে তাদের ভিডিও বার্তার কথা। আমার কয়েকজন সহকর্মী একটি লাইভ ভিডিও দেখিয়েছেন। সেটি দেখলাম। দেখার পর মনে হলো—জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান ও বোকোহারাম যেমন ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বিভিন্ন উসকানি ও নাশকতার অপপ্রয়াস নেয়, কোটা আন্দোলনকারীদের ভিডিওতে ঠিক তেমন একটি প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়েছি।’
সারাবাংলা/একে