Monday 06 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আইন সংশোধন বিষয়ে তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৬ অক্টোবর ২০২৫ ২২:২৩

বিটিসিএ ও বিএটিএ এর যৌথ উদ্যোগে প্রতিবাদ কর্মসূচি

ঢাকা: সরকারের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে অধিকতর শক্তিশালী করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। তবে তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষার এই মহান উদ্যোগকে ব্যাহত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা নিজেদের অংশীজন দাবি করে আইন সংশোধনে মতামত দিতে চাইছে যা সুস্পষ্টভাবে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ এর লঙ্ঘন।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল এডভোকেডস (বিটিসিএ) ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বিএটিএ) এর যৌথ উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ভ্রাম্যমাণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এসব কথা বলা হয়।

প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক আইন, বিধিমালা বা নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানি বা তাদের সহযোগীদের মতামত গ্রহণ না করাসহ ‘সব নীতিতে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য’ বাস্তবায়নে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় জোরদার করার দাবি তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সোমবার বিকেলে ‘আইন নিয়ে তামাক কোম্পানির সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়’ এই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়। প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল এডভোকেডস, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, এইড ফাউন্ডেশন, ডাস্, নাটাব, মানস, টিসিআরসি, নারী মৈত্রী, আইডাব্লিউবি এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রতিনিধিসহ বিএমএসএস, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিসহ শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষে ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেইনটি জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে যাত্রা শুরু করে জাতীয় সংসদ ভবন, এনবিআর, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে দাবিগুলো জানানো হয়।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কোনোভাবেই সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার স্টেকহোল্ডার হতে পারে না। স্টেকহোল্ডার বা অংশীজন মূলত তারাই, যারা একই লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অর্জনের সহযোগী। বাংলাদেশ সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্য তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু কমানো এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন।

অপরদিকে, তামাক কোম্পানির লক্ষ্য ক্ষতিকর পণ্য সম্প্রসারনের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন। কাজেই সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ও সাংঘর্ষিক উদ্দেশ্য নিয়ে তামাক কোম্পানি সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টায় নিজেদের অংশীজন দাবি করে আইন সংশোধনে মতামত দিতে পারে না ।

বক্তারা আরও বলেন, ‘কোম্পানির প্রভাবমুক্ত নীতিনির্ধারণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে, এফসিটিসি স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে কোনো দেশেরই তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক আইন, বিধিমালা বা নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানি বা তাদের সহযোগীদের মতামত গ্রহণ করা যৌক্তিক নয় এবং তা একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন । বিগত দিনে, তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যখনই কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তখনই কোম্পানিগুলোকে সরকার ও নীতিনির্ধারকদেরকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত এবং বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত হতে দেখা গেছে। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

বক্তারা বলেন, ‘কোম্পানিগুলো মূলত কিশোর তরুণদের তামাক সেবনে উৎসাহিত করে ব্যবসা বাড়াতে চায়। রাষ্ট্রের প্রতিটি সংস্থার দায়িত্ব আগামী প্রজন্মকে তামাকের সর্বনাশা ছোবল থেকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর প্রস্তাবনাকে সমর্থন করা এবং তামাক কোম্পানির কূটকৌশলকে প্রতিহত করা। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সব নীতিতে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। কাজেই উক্ত প্রতিশ্রুতি এবং এফসিটিসি বাস্তবায়নে তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহত করে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা এখন সময়ের দাবি।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই

তামাক বিরোধী জোট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর