রংপুর: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) প্রথম সমাবর্তন আগামী ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে তিনি প্রধান অতিথির উপস্থিতির বিষয়টির নিশ্চিত করেন।
এর আগে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের প্রধান অতিথি হিসেবে আসার কথা থাকলেও তিনি অংশ নিতে পারবেন না বলে জানান। ফলে সমাবর্তন নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবে নতুন ঘোষণার মাধ্যমে এই অনিশ্চয়তা কেটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ, ছাত্র উপদেষ্টা ড. ইলিয়াছ প্রামানিক, প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান ও সমাবর্তন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম।
জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামে প্রতিষ্ঠিত বেরোবি উত্তরের ‘বাতিঘর’ হিসেবে পরিচিত। প্রতিষ্ঠার দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। সাবেক উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমান প্রশাসনও এ বিষয়ে তেমন উদ্যোগী ছিল না, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাবর্তন আয়োজনের বিষয় নড়েচড়ে বসে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও স্মরণীয় দিন। চার বছরের পরিশ্রমের ফল হিসেবে ডিগ্রি প্রাপ্তির এই আনুষ্ঠানিকতা শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। গাউন পরে প্রিয়জনদের সঙ্গে ছবি তোলা, মা-বাবাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা, এমনকি তাদের সঙ্গে গাউন পরে ছবি তুলে স্মৃতি ধরে রাখা শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দের। এ ছাড়া, সমাবর্তনে প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, নোবেলজয়ী বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তৃতা শিক্ষার্থীদের দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
তবে, সমাবর্তনের অভাবে বেরোবির শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। সম্প্রতি এক শিক্ষার্থী দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেয়েও মূল সনদের অভাবে উচ্চশিক্ষার সুযোগ হারিয়েছেন। আরেক শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ জানান, বেরোবির প্রভিশনাল সার্টিফিকেট বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বীকৃত নয়, যার কারণে তিনি ইউরোপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাননি। দেশের অভ্যন্তরেও এই সনদ নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, আসছে ২০ ডিসেম্বর বেরোবির ৭৫ একরের প্রাণের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন উপহার দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।