রংপুর: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থেকে বদলি হওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামসুন্নাহারের যোগদান বাধাগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করতে এলে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েন। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের মধ্যস্থতায় তিনি শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগ করেন।
স্থানীয় সূত্র ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা যায়, ডা. শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্টাফদের সঙ্গে অসদাচরণ ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর জেরে তাঁকে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়। তবে এই বদলির খবর জানাজানির পর থেকেই মিঠাপুকুরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীরা তাঁর যোগদানের বিরোধিতা করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ডা. শামসুন্নাহার কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন। তার যোগদান ঠেকাতে স্টাফরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। এরপর ডা. শামসুন্নাহার যোগদান না করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শামসুন্নাহার বলেন, আমি স্বাভাবিক নিয়মে কর্মস্থলে যোগদান করতে এসেছিলাম কিন্তু কেন এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করা হলো, তা আমার বোধগম্য নয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কারও সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই।
মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এম এ হালিম বলেন, ডা. শামসুন্নাহারের যোগদানের বিষয়টি নিয়ে স্টাফরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তার পূর্বের কর্মকাণ্ড নিয়ে স্টাফদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
জানা গেছে, এর আগে দুপচাঁচিয়া উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা ও হাসপাতালের স্টাফদের আন্দোলনের মুখে ডা. শামসুন্নাহারকে মিঠাপুকুরে বদলি করা হয়েছিল।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। নিরাপদ পরিবেশে ডা. শামসুন্নাহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগ করেছেন।
এ ঘটনা মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রমে সাময়িক অচলাবস্থা সৃষ্টি করলেও পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।