ঢাকা: বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি গত কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসে তথা গত আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। আলোচ্য মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর আগের মাসে অর্থাৎ গত জুলাইয়ে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র মতে, চলতি পঞ্জিকা বছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। গত জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ১০ শতাংশ। এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশের মতো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত বছর সরকারের পালাবদলের পর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পুরো সময়ই বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা ছিল নিম্নমুখী। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও সেই প্রবণতা চলমান রয়েছে।
তথ্য মতে, গত ২০২৪ সালের আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। পরের মাস সেপ্টেম্বরে তা আরও কমে হয় ৯ দশমিক ২০ শতাংশ, যেটি ছিল তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। নিম্নমুখী এ হার পরের মাসে আরও কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে। আর নভেম্বরে সেটা কমে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশে নেমে যায়। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। জানুয়ারিতে তা আরও কমে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশে নেমে যায়। ফেব্রুয়ারিতে তা আরও কমে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে নামে। মার্চে তা কিছুটা বেড়ে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ হলেও এপ্রিলে তা কমে হয় ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। মে মাসে তা আরও কিছুটা কমে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমেছে। জুনে ছিল ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলা-কে বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখনো সন্তোষজনক না হওয়ায় বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে ঋণের চাহিদাও বাড়ছে না। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ অনেকদিন ধরেই জিডিপির আনুপাতিক হারে ২২-২৩ শতাংশের সীমায় উঠা-নামা করছে। এ পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে বিনিয়োগ স্থবিরতা আরও বাড়বে। এতে উৎপাদন হবে না, সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানও হবে না। ফলে সরকারের যে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটাও অর্জিত হবে না।’
মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করছে। তারা বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে তারা যদি ঋণ চায়, তাহলে আমরা তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।’