Wednesday 08 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রম সংস্কার ত্বরান্বিত করতে সামাজিক সংলাপ ফোরাম গঠনের আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৮ অক্টোবর ২০২৫ ২২:২৯

শ্রম, কর্মসংস্থান ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেনসহ অন্যান্যরা

ঢাকা: দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শ্রম সংস্কারের লক্ষ্যে কার্যকর সামাজিক সংলাপকে একটি কার্যকরী পন্থা হিসেবে তুলে ধরতে দুই দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) শুরু হওয়া এই সম্মেলন শেষ হবে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর)। সম্মেলনের প্রথম দিনে বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারকে ত্বরান্বিত করতে জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরাম গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

‘বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শ্রম সংস্কারের হাতিয়ার হিসেবে কার্যকর সামাজিক সংলাপ: মানদণ্ড, শিক্ষা এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা’ প্রতিপাদ্যে এই সম্মেলন চলছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে সরকার, নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক প্রতিনিধি ছাড়াও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম, কর্মসংস্থান ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শ্রমিক, নিয়োগকর্তা ও সরকারের মধ্যে পরামর্শ ও সংলাপের সংস্কৃতি তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। গত এক বছরে আমরা দেখেছি যেকোনো বিরোধ বা মতবিরোধ গঠনমূলক ও ইতিবাচক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন একটি বৈধ ও কার্যকর সামাজিক সংলাপের প্ল্যাটফর্ম। আশা করি, এই দুই দিনের সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে একটি স্থায়ী জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরামের রূপরেখা নির্ধারণ করবেন।’

অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানওয়ার জাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘এই ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকারের প্রতিফলন। সরকার, নিয়োগকর্তা কিংবা শ্রমিক- একা কোনোভাবেই টেকসই সংস্কার নিশ্চিত করতে পারে না। সহযোগিতা, আস্থা ও সামাজিক সংলাপই হবে আমাদের পথনির্দেশক।’

আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর (মনোনীত) মি. ম্যাক্স তুয়োন বলেন, ‘শক্তিশালী সামাজিক সংলাপই টেকসই কর্মসংস্থান ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের মূল চাবিকাঠি। এটি শুধু একটি কার্যকরী পন্থা নয়, বরং এটি একটি সংস্কৃতি— যা গড়ে তুলতে প্রয়োজন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, সুদৃঢ় আইনি কাঠামো এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি।’

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক’-এর পক্ষে বলেন, ‘কার্যকর সামাজিক সংলাপ ও যৌথ দরকষাকষির জন্য সংগঠিত ও কাঠামোবদ্ধ কর্মীশক্তি অপরিহার্য। স্বল্পমেয়াদি লাভের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাস ও অন্তর্ভুক্তি তৈরিই এই সংলাপের মূল চাবিকাঠি হওয়া উচিত।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশন এর চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।

প্রসঙ্গত, দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন ও কানাডা— যারা ‘টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ অন ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’-এর অংশীদার।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই

আইএলও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শ্রম সংস্কার