Thursday 09 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাময়িক শ্রমিক নীতিমালা ২০২৫ বাতিল ও স্থায়ীকরণের দাবিতে বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৩৫ | আপডেট: ৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:১৮

প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের আয়োজিত সমাবেশ।

ঢাকা: সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা, ন্যায্য বেতন, ছুটির সুবিধা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সংগঠনের নেতারা ‘দৈনিক ভিত্তিক সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ বাতিলের দাবি জানান এবং অবিলম্বে একটি মানবিক ও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘কর্মকর্তারা যথাযথ নিয়োগপত্র ছাড়াই শ্রমিকদের দৈনিক মজুরিতে নিয়োগ দেন। ফলে যেকোনো সময় তাদের কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়। ৩০ দিন কাজ করিয়ে ২২-২৬ দিনের বেতন দেওয়া সম্পূর্ণ অন্যায়। যদি সাপ্তাহিক ছুটি না দেওয়া হয়, তবে ৩০ দিনের মজুরি দিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘এই শ্রমিকদের পরিবার, সন্তান রয়েছে। তারাও অসুস্থ হন, বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। অথচ সরকার এসব মৌলিক মানবিক চাহিদা উপেক্ষা করছে। আমরা প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়ন এবং অর্থমন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

জোনায়েদ সাকি আরও অভিযোগ করেন, অনেকের নামে বেতন তোলা হলেও তারা প্রকৃতপক্ষে কর্মরত নন। সরকারি অর্থ লোপাট হলেও প্রকৃত শ্রমিকদের জীবনে কোনো উন্নতি হচ্ছে না।

বক্তাদের ১২ দফা মূল দাবিগুলো হলো—ন্যূনতম মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণ, বছরে ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি, ঈদ বোনাস, বৈশাখী ভাতা, ঝুঁকি ভাতা, চিকিৎসা ও শিক্ষা ভাতা চালু, ৯০ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি, সাপ্তাহিক ছুটি ও ২০ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিশ্চিত, ৩ বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরতদের স্থায়ীকরণে পরীক্ষা ও যাচাইয়ের মাধ্যমে পদায়ন, নিয়োগপত্র প্রদান বাধ্যতামূলক করা, সুনির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও পদবী নির্ধারণ, প্রতি অর্থবছরে দুটি ইউনিফর্ম সরবরাহ, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার প্রদান, আইনি সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, ‘দৈনিক ভিত্তিক সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ বাতিল, স্থায়ী নিয়োগ ও চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান।

সমাবেশে বক্তব্য দেন, শ্রমিক প্রতিনিধি কাজী সিরাজুল ইসলাম সোহাগ, যিনি অভিযোগ করেন, ‘আগে মাসে ৩০ দিন কাজ করলে ৩০ দিনের বেতন পেতাম। এখন ৩০ দিন কাজ করেও বেতন পাই মাত্র ২২ দিনের। ঈদের বোনাস, ছুটির সুবিধাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

শ্রমিক মোহাম্মদ শাহের হোসেন বলেন, ‘২০২৫ সালের নীতিমালার আগে আমরা মাস্টার রোল কর্মচারী ছিলাম। এখন বলা হচ্ছে আমরা সাময়িক শ্রমিক। যেকোনো সময় ছাঁটাই করা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ অমানবিক।’

নারী শ্রমিক প্রতিনিধি শীলা ইসলাম বলেন, ‘নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি, সাপ্তাহিক ও নৈমিত্তিক ছুটির কোনো সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন কাজ করেও কোনো নিরাপত্তা নেই।’

সমাবেশ থেকে সরকারকে অবিলম্বে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়। ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এফএন/এনজে

বিক্ষোভ সাময়িক শ্রমিক নীতিমালা