Friday 10 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুবিতে কুকুর নিয়ন্ত্রণে বন্ধ্যাত্বকরণ ও টিকাদান কার্যক্রমের উদ্যোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ অক্টোবর ২০২৫ ১১:২৪

টিকাদান কার্যক্রমের স্থল।

খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে কুকুরের উৎপাত। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একাডেমিক ভবন, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ কিংবা আবাসিক হল, আবাসিক এলাকা সর্বত্রই দেখা যায় তাদের চলাচল। অনেক সময় কুকুরের আচরণে আতঙ্কিত হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা, কেউ কেউ আক্রমণের শিকারও হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রাণীপ্রেমী শিক্ষার্থীরা একযোগে এগিয়ে আসেন মানবিক সমাধানের পথে।

এই প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে কুকুর নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক ও মানবিক উদ্যোগ- বন্ধ্যাত্বকরণ (স্পে-নিউটার) ও টিকাদান কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রাণীপ্রেমী শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ‘স্নেহটেইল’-এর আয়োজনে এই কার্যক্রম পরিচালনায় দায়িত্ব নিয়েছে ফারি ফ্রেন্ডন্স ফাউন্ডেশন নামের একটি বিশেষায়িত দল।

বিজ্ঞাপন

আগামী ১৬ অক্টোবর তারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কুকুরগুলোর বন্ধ্যাত্বকরণ অপারেশন শুরু করবে। এরইমধ্যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুকুর অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। দুটি রুম প্রস্তুত রাখা হয়েছে- একটি আগত দলের আবাসনের জন্য, অন্যটি পোস্ট-অপারেটিভ কেয়ার ইউনিট হিসেবে। অপারেশনের পর দুইদিন কুকুরগুলোর খাবার সরবরাহ এবং পর্যবেক্ষণের জন্য একজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

‘স্নেহটেইল’-এর ফাউন্ডার তামান্না রহমান তন্নী বলেন, ‘বর্তমানে ক্যাম্পাসে ৬০ থেকে ৭০টি কুকুর রয়েছে। অনেক সময় তারা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে বা আক্রমণাত্মক আচরণ করে, আবার অনেক শিক্ষার্থী তাদের খাওয়ানও। তাই আমরা এমন একটি উদ্যোগ নিতে চেয়েছি যাতে মানুষ ও প্রাণী- দুজনেই নিরাপদে থাকতে পারে। প্রাণী নিধনের পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণ ও সহাবস্থানের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানই সবচেয়ে মানবিক পথ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে কুকুরগুলো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এরপর বন্ধ্যাত্বকরণ অপারেশন ও র‌্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। অপারেশনের পর প্রতিটি কুকুরের গলায় পরিচয় বেল্ট পরানো হবে এবং কানের একটি অংশ কেটে চিহ্নিত করা হবে, যাতে সহজে বোঝা যায়- ওই কুকুরটি নিরাপদ ও বন্ধ্যাত্বকৃত। অপারেশনের পর কুকুরগুলোর শারীরিক অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হবে।’ কুকুরের পাশাপাশি বিড়ালগুলোকেও র‌্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে সচেতনতা, দায়িত্ববোধ ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছে, তা প্রশংসার দাবিদার। প্রশাসন এই উদ্যোগে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। এর ফলে ক্যাম্পাস আরও নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও প্রাণবান হয়ে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

সারাবাংলা/এসডব্লিউ

কুকুর নিয়ন্ত্রণ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ্যাত্বকরণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর