Friday 10 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলনায় ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের গণমিছিল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:১৭

খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত গণমিছিল।

খুলনা: জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে খুলনায় সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক শহিদ হাদিস পার্কে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এ সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক খুলনা-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

এ সময় তিনি বলেন, যে লক্ষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আগামীতে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পুরোপুরি বিলুপ্তির পাশাপাশি পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মতভাবে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরছি। জনগণ আমাদের গণমিছিলে অংশগ্রহণ করে প্রমাণ হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর দাবি জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন ছাড়া দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ জামায়াতের ৫ দফা দাবিতে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। এরই মধ্যে এসব দাবিতে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলও যুগপৎ কর্মসূচী পালন করছে। এরকম গণদাবি উপেক্ষা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা পরিপন্থি। একটি দল ও তাদের সাথে থাকা ক্ষুদ্র কয়েকটি দল এসব দাবি উপেক্ষা করে যেনতেন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমরাও ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচনের পক্ষে। কিন্তু এর আগেই জাতি সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান বাস্তবায়ন দেখতে চায়।

মাস্টার শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতাদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ জাতীয় পার্টি যদি শেখ হাসিনাকে সমর্থন না করতো তাহলে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদ হয়ে উঠতে পারতো না।

তিনি আরও বলেন, সরকার যদি নির্বাচনের আগে আমাদের ৫ দফা দাবি মেনে না নেয় তাহলে আমরা একের পর এক তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো। জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন আয়োজন, উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান অন্তবর্তী সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার আঁতাত করে ‘সেইফ এক্সিট’ নেওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে তা প্রতিহত করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কেন্দ্র দখল, নমিনেশন কেনাবেচা ও কালো টাকা বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। সনাতনী পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতির নির্বাচন জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরীর আমির খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা দেন- খুলনা জেলা নায়েবে আমির ও খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মহানগরী সেক্রেটারি ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির ও খুলনা-১ নং আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা শেখ মো. আবু ই্উসুফ, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, জেলা সেক্রেটারি ইলিয়াস হোসাইন, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক। অন্যান্যের মধ্যে খুলনা মহানগরী নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, মহানগরী অফিস সেক্রেটারি মিম মিরাজ হোসাইন, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন, খুলনা সদর থানা আমির এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমির জি এম শহিদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমির আব্দুল্লাহ আল মামুন, হরিণটানা থানা আমির আব্দুল গফুর, দৌলতপুর থানা আমির মুশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমির মুনাওয়ার আনসারী, লবণচরা থানা আমির মোজাফফর হোসেন, খুলনা সদর থানা সেক্রেটারি আব্দুস সালাম, সোনাডাঙ্গা থানা সেক্রেটারি মাওলানা জাহিদুর রহমান নাঈম, খালিশপুর থানা সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দীন, আড়ংঘাটা থানা সেক্রেটারি শেখ মো. তুহিন, হরিণটানা থানা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ব ম মনিরুল ইসলাম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সহ-সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান ও কাজী মাহফুজুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গণমিছিলটি নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরীঘাট মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড়, সঙ্গিতা মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। গণমিছিলে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ব্যানার-প্লাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার জনতা অংশ নেয়।

সারাবাংলা/এনজে

গণমিছিল জামায়াত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর