ঢাকা: বেশ কয়েক দিন ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত ঢাকা এবার তুলনামূলকভাবে কিছুটা স্বস্তির অবস্থানে। পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের দিল্লির তুলনায় আজ ঢাকার বায়ুর মান উন্নতির দিকে— এমন তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ার।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে প্রকাশিত সূচকে দেখা যায়, বায়ুদূষণের তালিকায় লাহোর শীর্ষে, দিল্লি দ্বিতীয় এবং ঢাকা ১৩তম স্থানে রয়েছে।
লাহোরের দূষণ স্কোর ২১৩, যা “খুবই অস্বাস্থ্যকর” পর্যায়ের; দিল্লির স্কোর ১৭৮, “অস্বাস্থ্যকর” পর্যায়ের। অপরদিকে ঢাকার স্কোর ১৩৫, যা “সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর” ধরা হয়েছে।
বায়ুদূষণের সূচকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় এবং চতুর্থ অবস্থানে আফ্রিকার উগান্ডার কামপালা। দক্ষিণ এশিয়ার বড় শহরগুলোর মধ্যে কেবল ঢাকা কিছুটা উন্নতির লক্ষণ দেখাচ্ছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক ও নির্মাণ কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আর বৃষ্টিপাতের প্রভাবে হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বায়ুর মান সূচকে (AQI) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে স্কোর থাকলে তা “ভালো” হিসেবে গণ্য হয়।
৫১ থেকে ১০০ হলে “সহনীয়”,
১০১ থেকে ১৫০ হলে “সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর”,
১৫১ থেকে ২০০ হলে “অস্বাস্থ্যকর”,
২০১ থেকে ৩০০ হলে “খুবই অস্বাস্থ্যকর”এবং
৩০১-এর বেশি হলে “দুর্যোগপূর্ণ” হিসেবে বিবেচিত হয়।
পরিবেশবিদদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি, নির্মাণ প্রকল্পে সময়সীমার নিয়ন্ত্রণ, এবং যানবাহনের ধোঁয়া কমানোর উদ্যোগ ঢাকার বায়ু মান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন— এটি স্থায়ী সমাধান নয়। মৌসুমি পরিবর্তন ও শীতকালে আবার দূষণের মাত্রা বাড়তে পারে।
আইকিউএয়ারের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান মানও সংবেদনশীল গোষ্ঠী— বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। ফলে শহরে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এখনো বিদ্যমান।
পরিবেশবাদীরা মনে করেন, শিল্পাঞ্চলে নির্গমন নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণসাইটে ধুলা ব্যবস্থাপনা, গণপরিবহণে জ্বালানি মান উন্নয়ন, এবং সবুজ এলাকা সংরক্ষণই দীর্ঘমেয়াদে ঢাকার বাতাসে প্রকৃত স্বস্তি আনতে পারে।