ফরিদপুর: ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত পরিবারের মাঝে সাবেক সংসদ সদস্য ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের পক্ষ থেকে অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল ভাঙচুর করা হয়েছে। ভাঙ্গা প্যান্ডেলই চরবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও ফরিদপুর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও জয়নাল মাতুব্বরের ডাঙ্গীতে পদ্মার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন একে আজাদ এবং ২৫৫ পরিবারকে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা অনুদান তুলে দেন। এসময় তিনি পদ্মা নদীর ভাঙ্গন থেকে ফরিদপুরের চরাঞ্চলের জনপদ রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে চরবাসীকে আশ্বাস দেন।
অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের পদ্মার পাড়ে ৪ ও ৫ নংওয়ার্ডে স্টেজ ও প্যান্ডেল করা হয়। অনুষ্ঠান যাতে করতে না পারে সে কারণে রাতেই অজ্ঞাতরা ৫নং ওয়ার্ডের প্যান্ডেল ভেঙ্গে সামিয়ানা খুলে নিয়ে যায়। পরে দুপুরে সেই ভাঙ্গা প্যান্ডেলেই প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে অনুদান বিতরণ করেন এ কে আজাদ।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কে আজাদ বলেন, ‘চরবাসীর সবচেয়ে বড় সমস্যা নদী ভাঙ্গন। আমি এই এলাকার সন্তান, আমি চরবাসীর নদী ভাঙ্গার দুঃখ বুঝি। তবে এই নদী ভাঙ্গার বড় একটি কারণ অবৈধভাবে বালি উত্তোলন। রাতের আধারে এখনো বালি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। এদের প্রতিহত না করতে পারলে নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব না।’
একে আজাদ বলেন, ‘আড়াই টাকা ফিট বালি তুলে ৬ টাকা ফিট বিক্রি করে। কোটি কোটি ফিট বালি থেকে কোটি কোটি টাকা ভাগ বাটোয়ারা হয়। সেই টাকা কারা ভাগ পায় আমরা জানি। তাদের নাম মুখে নিতে চাই না। সামনে নির্বাচন তাদের নাম মুখে নিলে লজ্জায় ভোট চাইতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমার প্যান্ডেল ভাঙ্গা হয়েছে, আমি ভাঙ্গা প্যান্ডেলে রোদ্রের মধ্যে উপস্থিত চরবাসীকে নিয়ে এই অনুষ্ঠান করে গেলাম। এতে আমাদের সবারই কষ্ট হলো। কারো কোনো উপকার হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করবো কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখনো নেইনি। তবে মানুষ জিদ করলে অনেক কিছু করে। আমাকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। অনেক বড় বড়টার সঙ্গে খেলে এই পর্যন্ত এসেছি। হুমকি দিয়ে এমন সামাজিক কাজকে যারা বাধাগ্রস্থ করতে চান তাদের বলি, আমাকে নির্বাচনে নামতে বাধ্য করবেন না। আমি এখনো আপনাদের প্রতিপক্ষ নই। আমি আপনাদেরই একজন সকলে মিলে মিশে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’
এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লেখক ও সাংবাদিক মফিজ ইমাম মিলন বলেন, ‘দলমত বুঝি না। যারা ভালো কাজ করবে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। আজাদ সাহেব ভালো লোক। এখন আপনারাই বলেন এ কে আজাদের সঙ্গে থাকবো, নাকি টাউট বাটপারদের সঙ্গে থাকবো।’
তিনি বলেন, ‘যারা প্যান্ডেল ভেঙ্গেছে তারা কাজটি মোটেও ভালো করেনি। ভালো কাজে যারা বাধা সৃষ্টি করে তারা ভালো হতে পারে না। এটা অরাজনৈতিক একটি অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। এখানে ভাঙচুরের বিষয় আসতেই পারে না।’
অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে হামীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন, শিক্ষক নেতা আক্কাস হোসেন, আলীয়াবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ডাবলু, বিল্লাল হোসেন, এনজিও ব্যক্তিত্ব বিএম আলাউদ্দিন, নর্থ চ্যানেলের ইউনিয়নের মজিদ ফকির, ফারুক হোসেন, আক্তারুজ্জামান, মজনু পাট্টাদার, আফজাল ভূইয়া, ইউপি সদস্য সালমা বেগম, কহিনুর বেগম, আলমগীর খান, জুনায়েদ রহমান, সেকেন্দার মাতুব্বর, আবুল কালামসহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে এ কে আজাদ ওই ইউনিয়নের মোহন মিয়ার হাট ও ফাকের মিয়ার হাটে নির্বাচনী জনসংযোগ করেন।