ঢাকা: আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, আগামী বছর ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচনমুখী।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এরই মধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। গণতন্ত্র মঞ্চ প্রার্থী দিয়েছে ১৪০ আসনে। আর দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ মাসের মধ্যে তারা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।
এদিকে বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম থাকা দলগুলো এরই মধ্যে বিএনপির কাছ থেকে নমিনেশন নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। বড় দল হিসেবে বিএনপিও এসব দলের কাছ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা চেয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ১২ দলীয় জোটের অধিকাংশ দল একসময় ২০দলীয় জোটের শরিক ছিল। ২০২২ সালে ২০ দলীয় জোট ভেঙে যাওয়ার পর জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) বর্তমান চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে ১২টি দল এক হয়ে জোট করে। ২০২২ সাল থেকেই এই জোট বিএনপির সঙ্গে এক হয়ে মাঠের আন্দোলন সংগ্রামে ছিল।
এই জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বহু বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে আছি। ২০ দলীয় জোট ভেঙে যাওয়ার পর কিছু দল একলা চলো নীতিতে থাকলেও আমরা ১২টি দল এক হয়ে বিএনপির সঙ্গে ছিলাম। এখনো বিএনপির সঙ্গে আছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নিয়ে আগামীতে সরকার গঠন করবেন- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সেজন্য আমরা বিএনপির সঙ্গে আছি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনি জোটে থাকার জন্য আমাদের জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে তালিকা দিয়েছি। এখন কয়টি আসনে মনোনয়ন দেবে সেটা তাদের ব্যাপার।’
১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বিএনপিকে যে ২১ জনের নাম দেওয়া হয়েছে
- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার (পিরোজপুর-১)
- বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১)
- বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা (কিশোরগঞ্জ-৫)
- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন (কুষ্টিয়া-১)
- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (একাংশ) মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম (কুমিল্লা-৬)
- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য নবাব আলী আব্বাস খান (মৌলভীবাজার-২)
- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মো. নাহিদ (কুমিল্লা-১১)
- ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান (বরগুনা-২)
- বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (একাংশ) চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন পারভেজ (নোয়াখালী-৫)
- বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু (ঢাকা-৫)
- বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব এম এ বাশার (ময়মনসিংহ-৮)
- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের (একাংশ) যুগ্ম-মহাসচিব রশিদ বিন ওয়াক্কাস (যশোর-৫)
- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের (একাংশ) যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ তালহা আলম (সুনামগঞ্জ-৩)
- ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব (সিলেট-৬)
- বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম (ঢাকা-১২)
- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম মাস্টার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪)
- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান (মুন্সীগঞ্জ-৩)
- ইউনাইটেড লিবারেল পার্টির আমিনুল ইসলাম (পিরোজপুর-২)
- বাংলাদেশ এলডিপির শাহনেয়াজ সুয়েজ (সিরাজগঞ্জ-৬)
- হাফেজ রশিদ আহমাদ (সুনামগঞ্জ-১)
- মাওলানা শেখ শরিফ উদ্দীন খাঁ (সিলেট-৪)
জানা গেছে, এই ২১ জনের মধ্যে অন্তত তিনটি আসন ১২ দলীয় জোটের নেতাদের ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে পিরোজপু-১ আসনে সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম (২০১৮ সালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন) ও কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।