Sunday 12 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাটুল সিন্ডিকেটে জিম্মি রুপগঞ্জ মুরগি বাজার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৫ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:২৭

অভিযুক্ত বাটুল মজুমদার। ছবি: সারাবাংলা

নড়াইল: বাটুল মজুমদার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে নড়াইলের রুপগঞ্জ মুরগির বাজার। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময়ে মুরগি ব্যবসায়ী বাটুল মজুমদার মুরগি বাজারের ১১টি দোকানের মধ্যে ৯টিই দখল করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুদ্র প্রান্তিক মুরগি ব্যবসায়ীরা। মুরগি বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এক সময়ের ফুটপাতের মুরগি ব্যবসায়ী বাটুল মজুমদার এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক। এসব দোকানে কেবল তিনি একাই বেশী দামে মুরগি সরবরাহ করেন ও ওজনে কম দেওয়ার কারনে অনেকবার গুনেছেন জরিমানা।

সরেজমিনে শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রুপগঞ্জ মুরগি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে বাটুল মজুমদার প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের মারধর করছেন।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী বিপুল, রাকীব, ইয়াসিন, মশিয়ার, হানিফ মোল্লা জানান, প্রায় ২০ বছর আগে রুপগঞ্জ মুরগি বাজারে প্রান্তিক মুরগি ব্যবসায়ীদের ৬ ফুট প্রস্থে দখলসূত্রে মৌখিকভাবে বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন। বাটুল মজুমদারও সে সময় একটি দোকান বরাদ্দ নেয়। এরপর আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় গড়ে তোলেন একক আধিপত্য। আধিপত্য বিস্তার করে মুরগি বাজারের সব দোকানে তার কাছ থেকে পাইকারি অসুস্থ মুরগি নিতে বাধ্য করেন। এরপর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকে টাকা বাকি থাকার মিথ্যা অজুহাতে সন্ত্রাসী দিয়ে একের পর এক ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করে দখল করে নিয়েছেন মুরগি বাজারের প্রায় সব দোকান।

মুরগি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাকে উচ্ছেদ করার জন্য হুমকি দিচ্ছে এবং যেকোনো সময় আমাকে উচ্ছেদ করতে পারে। আমি আপনাদের সহযোগিতায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এভাবে দিনের পর দিন বাটুল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা যখন যাকে প্রয়োজন তাকে ব্যাবহার করে তার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে রাখে। মুরগির দামের ব্যাবধান ২০ টাকা কম থাকে সবসময়ই বাটুলের কারনে। অনেক পুরানো ব্যাবসায়ীকে দেনাদার বানিয়ে তাদের দেউলিয়া করে প্রায় সব ঘর দখল করে নিয়েছে বাটুল সিন্ডিকেট। মুরগি ব্যবসায়ীদের নেই কোনো স্বাধীনতা। এই জিম্মিদশা থেকে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বাঁচতে চায়। তারা ভাঙতে চায় এই সিন্ডিকেট। তারা বাটুলের দখল প্রক্রিয়া থেকে মুক্তি পেতে চায়। বাটুলের ক্যাডার বাহিনী হাত থেকে তারা রেহাই চায়।’

বাজার সিন্ডিকেট করে ওজনে কম ও বেশি দামে অসুস্থ মুরগি বিক্রি করে কোটিপতি হয়েছেন বাটুল। গড়েছেন বিশাল আলিশান বাড়ি। নামে-বেনামে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কিনেছেন জমি। এবিষয়ে বাটুল মজুমদার বলেন, ‘কাউকে জোর করে উচ্ছেদ করিনি, তারা স্বেচ্ছায় বিক্রি করেছে, আমি কিনেছি।’

রূপগঞ্জ কাঁচাবাজার সমিতির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, ‘আজকে আমি বাজারে ছিলাম না। ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলাম। তবে আমরা একাধিকবার শালিশ করে মুরগি ব্যবসায়ীদের বলেছি ওজনে ঠিকঠাক দিতে এবং রোগা ও মরা মুরগি না দিতে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করি। কোনো ব্যবসায়ী মুরগির ওজন যদি কম দেয় ও দাম বেশি নেয়. তাহলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর