Sunday 12 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক: একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালকের পদত্যাগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ অক্টোবর ২০২৫ ২১:০৯ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ২২:৫৫

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালক মো. রেজাউল হক। তিনি ছিলেন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা শেয়ারধারী ও সাবেক চেয়ারম্যান।

রোববার (১২ অক্টোবর) ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক বর্তমানে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পরপরই সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরির্ষদ থেকে পদত্যাগ করলেন ব্যাংকটির শেয়ারধারী একমাত্র পরিচালক মো. রেজাউল হক। ২০১৭ সালে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপর সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল হক ও চার স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে পর্ষদ পুর্নগঠন করা হয়। পুনর্গঠিত পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান স্বতন্ত্র পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম। তবে এক বছরেও ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ কারণে ব্যাংকটিকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শিগগিরই ব্যাংকটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগেই পদত্যাগ করেন মো. রেজাউল হক।

বিজ্ঞাপন

পদত্যাগের চিঠিতে কারণ সম্পর্কে মো. রেজাউল হক লিখেছেন, ‘স্বতন্ত্র পরিচালকদের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের সঙ্গে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কোনো স্বার্থের বিষয় জড়িত না থাকা সত্ত্বেও তাদের সমন্বয়ে পর্ষদ গঠন করা হয়। এ কারণে এক বছরের অধিক সময়েও ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ব্যাংকের প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে ব্যাংকটি পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিলে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হতো। এই দায় অবশ্যই ব্যাংকের বর্তমান পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার ওপরে বর্তায়। স্বতন্ত্র পরিচালকেরা বিগত এক বছরের বেশি সময় শুধু দৈনিক অফিস করা ও বেতন নেওয়া ছাড়া ব্যাংক পরিচালনায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেননি। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাংকটি একীভূতের জন্য যে শুনানির আয়োজন করেছিল, সেখানে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা আমাকে না জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন। অথচ ব্যাংক একীভূতের শুনানিতে অংশগ্রহণের কোনো এখতিয়ার স্বতন্ত্র পরিচালকদের নেই।’

চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া পদত্যাগপত্রে মো. রেজাউল হক আরও জানান, ‘২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার মেয়াদে ২০১৬ সালে শেয়ারধারীদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এস আলমের দখলের পর থেকে সাত বছরে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলমের পরির্ষদ বাতিল করে ব্যাংকের প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে ব্যাংকটি পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রস্তাব দেওয়া হলেও স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়, যা ছিল একটি অকার্যকর সিদ্ধান্ত।’

মো. রেজাউল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংক পরিচালনায় স্বতন্ত্র পরিচালকেরা ব্যর্থ হয়েছেন। এ জন্য পদত্যাগ করেছি। এখন তারা কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় আর পর্ষদের সভা করতে পারবেন না।’

সারাবাংলা/ আদিল/জিজি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর