ঢাকা: বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় আবারও শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের (IQAir) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার গড় বায়ুমান সূচক (AQI) রেকর্ড করা হয়েছে ১৭০, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত।
বায়ুদূষণের দিক থেকে আজ বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার AQI ১৯৪। ঢাকার পরেই রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি, যেখানে বায়ুমানের অবস্থা ঢাকার মতোই নাজুক।
আইকিউএয়ার প্রতিদিন বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর বায়ুমান পরিমাপ করে একটি তাৎক্ষণিক সূচক প্রকাশ করে, যা জনসাধারণকে সচেতন করতে সহায়তা করে। এই সূচকের মাধ্যমে জানা যায়, কোনো শহরের বাতাস কতটা দূষিত বা শ্বাস-প্রশ্বাসের উপযোগী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় বৃষ্টি ছাড়া বায়ুদূষণ কমানোর কার্যকর কোনো উপায় এখনো দেখা যাচ্ছে না। সরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বৃষ্টি হলে অস্থায়ীভাবে দূষণ কমে যায়, কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই আবার তা বেড়ে যায়।
প্রতিবছরের মতো এবারও অক্টোবর মাসের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসের মান দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। বছরের মাঝামাঝি, বিশেষত জুলাই মাসে দূষণের মাত্রা কিছুটা কম থাকে। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও একাধিক দিন ঢাকার দূষণ বিশ্বে শীর্ষে উঠে গিয়েছিল।
নগরীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষণ লক্ষ্য করা গেছে কল্যাণপুর (AQI ১৯৬), বেচারাম দেউড়ি (AQI ১৭৮) ও মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিং (AQI ১৭৫) এলাকায়। এসব এলাকায় বাতাসের মান শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও হৃদরোগীদের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে আইকিউএয়ার।
অস্বাস্থ্যকর বায়ুমানের কারণে নগরবাসীর জন্য সংস্থাটি কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে—
বাইরে বের হলে অবশ্যই উচ্চমানের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে,
জানালা-দরজা বন্ধ রাখতে হবে, যেন দূষিত বাতাস ঘরে প্রবেশ না করে,
বাইরের ব্যায়াম বা দৌড়ানো এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষত সকালে ও রাতে যখন বাতাস স্থির থাকে।
পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, এখনই যদি কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে ঢাকার বায়ুদূষণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।