ঢাকা: বিশ্বব্যাপী দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস ও বিপদ মোকাবিলায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ (১৩ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’। এ বছরের প্রতিপাদ্য—“সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ”।
১৯৮৯ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছর এ দিবসটি পালন করা হচ্ছে। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় টেকসই উদ্যোগ নেওয়া।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। গত দুই দশকে দেশে ১৮৫টিরও বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদীভাঙন ও জলোচ্ছ্বাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলীয় এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, দুর্যোগের ফলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মৃত্যু, বাস্তুচ্যুতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এ জন্য দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে (Disaster Risk Reduction – DRR) সরকারি ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে সংস্থাটি।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ‘সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিআরআর (২০১৫–২০৩০)’। এটি একটি বৈশ্বিক চুক্তি, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং উন্নয়নের অর্জনগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশেও দিনটি পালিত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সেমিনার, আলোচনা সভা, প্রদর্শনী ও গণসচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্যোগের আগাম সতর্কতা, স্থানীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন ও জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশকে আরও প্রস্তুত করা সম্ভব।
দিবসটি স্মরণ করিয়ে দেয়— প্রতিরোধই সর্বোত্তম প্রস্তুতি; সমন্বিত উদ্যোগই পারে দুর্যোগের ক্ষতি কমিয়ে মানবজীবনকে নিরাপদ রাখতে।