ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, আমরা বিজেপি ও তালেবান কায়দায় দেশ চালাতে চাই না। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে প্রচেষ্টা আমাদের। আমরা যৌক্তিক সমাজ গঠন করতে চাই।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) জুলাই বিপ্লবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ‘ইকরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৫’ পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেন, “বিতর্কের স্লোগান, বিতর্ক হোক মুক্তির সোপান।’ এই মুক্তির জন্য আমরা গত ১৬ বছর চেষ্টা চালিয়েছি। যখন কোনো শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা হয়েছে তখন তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এ বৈধতা মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ কথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালে যে শাহবাগ হয়েছিল এটার মাধ্যমে এ দেশে ফ্যাসিবাদ দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে, মব জাস্টিস কায়েম হয়, শাপলায় গণহত্যা হয়। এর বৈধতা কথিত বুদ্ধিজীবীরা দিয়েছিলেন। তারাও মুক্তির কথা বলতেন। তারা এক পক্ষের মুক্তির কথা বলতেন। তারা সমাজে সবার মুক্তির কথা বলতে পারেনি।’
শিবিরের এই নেতা বলেন, ‘দুই হাজার শহিদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে, ৪০ হাজার ভাইবোনের আহত হওয়ার মাধ্যমে আজ আমরা মুক্তি পেয়েছি। স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। আপনাদের এ ক্যাম্পাসে বিশ্বজিতের কথা মনে থাকার কথা। শুধুমাত্র শিবির সন্দেহের কারণে তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার ফাহাদ হত্যার পর সবাই প্রতিবাদ করেছিল, শিবির সন্দেহে কাউকে মারা যাবে না। জুলাই বিপ্লবের পর আমরা একবছর ধরে দেখিয়েছি, কীভাবে কাজ করতে হয়, কীভাবে ছাত্রবান্ধব হতে হয়। শিক্ষার্থীরা যে ছাত্ররাজনীতির কথা বলছে, আমরা সেটা দেখিয়েছি।’
ছাত্রসংসদ নিয়ে সাদিক কায়েম বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী আমাদের প্রথম দাবি ছিল প্রতিটি ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ গঠন করা। শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই প্রতিটি ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব দিবে। শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা আইডিয়া নিয়ে যাব, তারা আলোচনা-সমালোচনা করে ঠিক করবে।’
বাংলাদেশের শিক্ষা নিয়ে ভিপি কায়েম বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দেশে পাবেন না যেখানে ছাত্ররাজনীতির নামে অপরাজনীতি হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, এমনকি নেপাল, ভুটানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জ্ঞান অর্জনের হাব হিসেবে কাজ করে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহিদ সাজিদের বোন ফারজানা হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন।
উল্লেখ্য, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ৩০টি দল অংশ নেয়। ফাইনালে অংশ নেয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস বিভাগ। আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ইতিহাস বিভাগ। অনুষ্ঠানে অতিথিরা বিজয়ী ও রানার্সআপ দল ও ডিবেটরদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।