পাবনা: পাবনায় গণপূর্ত বিভাগের একটি স্টাফ কোয়ার্টারের সমস্ত দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র ভেঙে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বদলি হওয়া ইব্রাহিম হোসেন নামের এক উপ-সহকারি প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনার সঙ্গে গণপূর্ত বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাবনা গণপূর্ত বিভাগের এই স্টাফ কোয়াটারটি দেখলে মনে হবে পরিত্যক্ত ভবন। নেই দরজা জানালা, নেই কোনো আসবাবপত্র। ভেঙে নেওয়া হয়েছে ভবনের সকল জিনিসপত্র। গণপূর্ত অধিদফতরের আবাসিক এই ভবনেই বসবাস করতেন প্রতিষ্ঠানটির উপ-বিভাগ-১ এর উপ সহকারি প্রকৌশলী ইব্রাহিম হোসেন।
জানা যায়, উপসহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম হোসেন গেল ছয় মাস আগে বদলি হয়ে চলে যান রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগে। হঠাৎ গত এক সপ্তাহ আগে রাতের আঁধারে তিনি পাবনায় এসে আগে বসবাস করা সেই স্টাফ কোয়ার্টারের দরজা জানালা ভেঙ্গে নিয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির অসৎ ও দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গণপূর্ত বিভাগের রাঙামাটি দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘পাবনাতে থাকা অবস্থায় ওই কোয়ার্টার আমি নিজের টাকায় মেরামত করে বসবাস করছি। সেই জন্য আসবাবপত্র বা জিনিষপত্রগুলো আমি নিয়ে এসেছি। আমি ভুল করেছি। সময় মতো ওগুলো লাগিয়ে দেওয়া হবে।’
স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, উপ-সহকারি প্রকৌশলী উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কমিশনের বিনিময়ে ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে কমিশন বাণিজ্য শুরু করেছিলেন। ইতোমধ্যেই তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। সেই সঙ্গে নানা ঘটনার জন্ম দিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ কবির। সূত্রটি বলছে, নির্বাহী প্রকৌশলীর কথা না শুনে কাজ করলে ওই কর্মকর্তাকে বদলি ও নানা অভিযোগ ছুঁড়তে নির্বাহী প্রকৌশলী নিজস্ব কিছু লোক বদলি করতে মরিয়া হয়ে উঠেন।
এ বিষয়ে পাবনা গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলেই দ্রুত সরকারি গাড়ি নিয়ে গণপূর্ত ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যান।
আর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্টাফ কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত। ইচ্ছে করলে যে কেউ সেটায় থাকতে পারে। এতে কোনো বাঁধা বা অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
তিনি বলেন, ইব্রাহিম হোসেন যে জিনিসগুলো নিয়ে গেছে সেগুলো ইতোমধ্যে লাগানো শুরু হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পাবনার সচেতন মহলের দাবি, একের পর এক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে পাবনা গণপূর্ত বিভাগ। নানা অনিয়ম আর দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে সরকারি সেবাদানকারী এই দফতরটি। দ্রুত দুদক তথা সরকারের সংশ্লিস্ট দপ্তরের অনুসন্ধান করে অসৎ ও দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।