ঢাকা: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালিত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে অক্টোবর স্মৃতি ভবনের টিভি কক্ষে উপাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল, প্রাক্তন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অজয় কুমার দাস, ড. জগদীশ চন্দ্র শুক্লদাস, ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম), জিএস এস এম ফরহাদ, জগন্নাথ হল সংসদের ভিপি পল্লব কুমার বর্মণ, জিএস সুদীপ্ত প্রামাণিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, আহত ছাত্র প্রতিনিধি ও ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তীসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংগঠনের নেতাবা বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাই উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান নিহতদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবরের মর্মান্তিক ঘটনা জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাংলাদেশকে একত্রিত করেছিল। ঐক্যের এই বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে এবং সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কয়েকটি হল নির্মাণ, পুরনো ভবন সংস্কারসহ একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবার, সবাইকে নিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়। উন্নয়ন কার্যক্রম সফল করতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ও ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। নিহতদের স্মরণে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া, হল প্রশাসনের উদ্যোগে নিহতদের প্রতিকৃতি চিত্র ও তথ্যপ্রমাণাদি প্রদর্শন করা হয়। বাদ মাগরিব বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ ‘মসজিদুল জামিআ’সহ সব হল মসজিদে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ২৬ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০ জন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর এ দিবসটি পালন করা হয়।