ঢাকা: সশস্ত্র বাহিনীর উচিত আইসিটির স্বাধীনতাকে সম্মান করা, যাতে ন্যায়সঙ্গত ও নিরপেক্ষ রায় দেওয়া সম্ভব হয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া (আইকেবি)।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইকবাল করিম ভূঁইয়া বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর ৫ আগস্ট থেকেই অস্থিতিশীল রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখার একমাত্র কার্যকর প্রতিষ্ঠান ছিল সশস্ত্র বাহিনী। এর কিছু সদস্যের নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িয়ে পড়া এই প্রতিষ্ঠানের ওপর রক্তের একটি দাগ— সন্দেহ নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনয়নে পুরো বাহিনীকে দোষারোপ করা বা আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা জাতির স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানারই শামিল। বিচার বা সাব-জেল সংক্রান্ত বিতর্ক আইনগত প্রক্রিয়ার বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর উচিত আইসিটির স্বাধীনতাকে সম্মান করা, যাতে ন্যায়সঙ্গত ও নিরপেক্ষ রায় দেওয়া সম্ভব হয়, একইসঙ্গে আইসিটিরও উচিত সশস্ত্র বাহিনী যেটি জাতির মেরুদণ্ডস্বরূপ—তাদের স্পর্শকাতরতা ও সংবেদনশীলতার প্রতি মনোযোগী হওয়া। দোষীরা বিচার পাবে এবং নির্দোষদেরও ন্যায়বিচার দিতে হবে। এটি বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো সংঘাত নয়; এটি কেবল আইন প্রয়োগের স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা। সমাজের কোনো কোণ থেকেই প্রতিশোধ পরায়ণতার অনুভূতি প্রকাশ পাওয়া উচিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনী একটি নেতৃত্বনির্ভর সংগঠন। নৈতিক শক্তির ভাঙন তাদের মনোবল দুর্বল করবে এবং ভবিষ্যতের দায়িত্ব পালনের সামর্থ্য ক্ষীণ করবে; বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তার ক্ষেত্রে। সেনাবাহিনীকে ইচ্ছাবশতঃ অবমাননা করার যেকোনো প্রচেষ্টা কেবল তাদের মনোবলে ফাটল ধরাবে এবং শত্রুকে সেই দুর্বলতা কাজে লাগানোর সুযোগ দেবে। এই সংকটকালে দেশের এখন প্রয়োজন এমন একটি সশস্ত্র বাহিনী, যা শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী—যা আমাদেরকে অস্থিতিশীল এক অবস্থা থেকে দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। আমরা যদি এই সশস্ত্র বাহিনীকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হই, তবে আমাদের প্রতিপক্ষ এক মুহূর্ত দেরি না করে সেই সুযোগ গ্রহণ করবে।’