Thursday 16 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিবিএক্স সূচকে দেশের ব্যবসার পরিবেশে সামান্য উন্নতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৫ ০০:০৯

সূচক প্রকাশ অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনসহ অন্যান্যরা। ছবি: সংগৃহীত

দেশে ব্যবসার পরিবেশে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের যৌথ জরিপে প্রণীত ‘বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স (বিবিএক্স)’ অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এই সূচক দাঁড়িয়েছে ৫৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে, যেখানে আগের অর্থবছরে ছিল ৫৮ দশমিক ৭৫।

অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে উন্নতি হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯৪ পয়েন্ট, যা বাস্তবে ব্যবসার পরিবেশে কোনো বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না। বরং আইনগত স্বচ্ছতা, অবকাঠামোগত সক্ষমতা, শ্রম ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য প্রক্রিয়ার সহজতা, প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিসর এবং পরিবেশ-মান নিয়ন্ত্রণ—এই ছয়টি সূচকেই আগের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) গুলশানে এমসিসিআই কার্যালয়ে চতুর্থবারের মতো সূচকটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সূচকে সামান্য অগ্রগতি দেখা গেলেও সামগ্রিক অবস্থা এখনো ‘গুরুতর প্রতিবন্ধকতাপূর্ণ’। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বৈশ্বিক অস্থিরতা, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি, মুদ্রা বিনিময়ের অস্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে ব্যবসা পরিবেশ এখনো সেই আগের মতই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

জরিপে ১১টি সূচকের ভিত্তিতে ব্যবসা পরিবেশ মূল্যায়ন করা হয়। এগুলো হলো— ব্যবসা শুরু, জমির প্রাপ্যতা, আইন ও বিধির তথ্যপ্রাপ্তি, অবকাঠামো সুবিধা, শ্রম নিয়ন্ত্রণ, বিরোধ নিষ্পত্তি, বাণিজ্য সহজীকরণ, কর পরিশোধ, প্রযুক্তি গ্রহণ, ঋণের প্রাপ্যতা এবং নতুনভাবে যুক্ত হওয়া পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ ও মান সূচক।

জরিপে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১২টি খাত— কৃষি ও বনায়ন, নির্মাণ, ইলেকট্রনিকস ও হালকা প্রকৌশল, আর্থিক মধ্যস্থতাকারী, খাদ্য ও পানীয়, চামড়া ও ট্যানারি, ওষুধ ও রাসায়নিক, আবাসন, তৈরি পোশাক, বস্ত্র, পরিবহণ, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা। আটটি বিভাগের ৮০০ ব্যবসায়ীর কাছে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়, যার মধ্যে ৬৫০ জন অংশ নেন এবং ৫৫৮ জনের তথ্য চূড়ান্তভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনার বেন কারসন। স্বাগত বক্তব্য দেন এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি. রহমান, আর বিষয়ের ওপর প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম. মসরুর রিয়াজ।

এবারের জরিপে দেখা গেছে, ১১টি সূচকের মধ্যে ৬টিতে অবনতি ঘটেছে, বেড়েছে ৫টি। সবচেয়ে বড় উন্নতি দেখা গেছে ঋণের প্রাপ্যতা সূচকে, যেখানে আগের বছর পয়েন্ট ছিল ২৮ দশমিক ১১, এবারে তা বেড়ে ৪০ দশমিক ০৭ হয়েছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি স্কোর থাকা অবকাঠামো সুবিধা সূচক কমে গেছে—গত বছরের ৭১ দশমিক ০৮ থেকে এবার দাঁড়িয়েছে ৬৮ দশমিক ৮২ পয়েন্টে।

বিবিএক্স জরিপে দেখা গেছে, ব্যবসা শুরুর সূচক বেড়ে ৬৪ দশমিক ৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৬২ দশমিক ৭৪। জমির প্রাপ্যতাও সামান্য বেড়ে ৫৩ দশমিক ১১ থেকে হয়েছে ৫৪ দশমিক ১০। তবে আইন ও বিধির তথ্যপ্রাপ্তি কমে দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ৭০, শ্রম নিয়ন্ত্রণ সূচক নেমে ৬৮ দশমিক ৯২, আর বাণিজ্য সহজীকরণ কমে হয়েছে ৫৯ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট। বিপরীতে বিরোধ নিষ্পত্তি সূচক কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ৭৩ এবং কর পরিশোধ সূচক বেড়ে হয়েছে ৫৫ দশমিক ৩৮। কিন্তু প্রযুক্তি গ্রহণ কমে গেছে ৬২ দশমিক ৪৬–এ এবং পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ সূচক নেমে এসেছে ৫০ দশমিক ১৮–তে। খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে কৃষি, খাদ্য, ওষুধ ও চামড়া খাতে কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেলেও, সামগ্রিকভাবে উন্নতির হার এখনো মন্থর।

বিবিএক্স সূচক মূলত বেসরকারি খাতের সুযোগ ও প্রতিবন্ধকতা বিশ্লেষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি-উপাত্ত। প্রতিবছর ব্যবসায়ীদের ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে এটি তৈরি করে এমসিসিআই ও পলিসি এক্সচেঞ্জ।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে ইরাক
১৭ অক্টোবর ২০২৫ ০০:০৩

আরো

সম্পর্কিত খবর