Saturday 18 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সবজি-মাছের দর স্থির, মুরগি-ডিমের দাম আরও বেড়েছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৩০ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৩৭

বাজারে সবজির দাম স্থির। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাজারে টানা একসপ্তাহ ধরে স্থির হয়ে আছে সবজি, মাছসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দর। যেসব পণ্যের দাম চড়া ছিল সেগুলো সপ্তাহের শেষেও চড়াই আছে। বরং মুরগি ও ডিমের দাম আরও বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউড়ি বাজার ও আসকার দিঘীর পাড় কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এ চিত্র দেখা গেছে।

গত সপ্তাহে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বৃহস্পতিবার কাজীর দেউড়ি বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর বিভিন্ন অলিগলির দোকানগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ হিসেবে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে অন্তঃত ১০ টাকা আর সোনালি মুরগির বেড়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এছাড়া কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বেড়েছে মুরগির দাম। ছবি: সারাবাংলা

বাজারে অন্যান্য মাংসের মধ্যে গত সপ্তাহের মতো গরু ও মহিষের মাংষ বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া গত সপ্তাহে বাজারে ফার্মের ডিমের দাম ছিল ডজনপ্রতি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। অলিগলির দোকানগুলোতে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ফার্মের ডিমের দাম বাজারে অন্তঃত ৫ টাকা বেড়ে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অলিগলির দোকানগুলোতে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিডজন ২২০ টাকায়।

ছবি: সারাবাংলা

নগরীর মোমিন রোডের স্বপ্ন পোল্ট্রি শপের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাসির সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে মাছের দাম বাড়তি। এজন্য ফার্মের মুরগি আর ডিমের চাহিদা বেড়েছে। সাপ্লাই আগের মতোই আছে। তবে চাহিদা বাড়ায় দাম ওঠানামা করছে।’

বাজারে এখনও অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। সবজির মধ্যে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ১২০ থেকে ২০০ টাকা, দেশি গাজর ৭০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি শসা ৭০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, পটল ৮০ থেকে ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে আবার ২০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনেপাতা কেজিতে ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।

এছাড়া পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মানভেদে লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি ২০০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, মূলা ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল আছে। এর ফলে বাজারে মাছের বাড়তি দর এখনও নিম্নমুখী হয়নি। বাজারে বড় সাইজের বাগদা প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮৫০ ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় রুই ৪৫০ থেকে ৫৮০ টাকা, মাঝারি ৪৬০ টাকা ও ছোট রুই ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতলা মাছ ৩৬০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট কোরাল মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০, পাবদা ৪০০, রূপচাঁদা ৮৫০ ও টেংরা ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার এখনও বাড়তি। ছবি: সারাবাংলা

বাজারে স্থিতিশীল আছে আলু-পেঁয়াজ, আদা-রসুনের দাম। আকার ও মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা করে। দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকা, সাদা আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের দামও অপরিবর্তিত আছে। খুচরা দোকানে মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা, আটাশ বালাম কেজি প্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা মোটা চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, বাসমতী ৯৫ থেকে ১২০ টাকা, চিনিগুঁড়া প্যাকেট ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা ও খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

মুদিপণ্যের মধ্যে বাজারে খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। প্যাকেটজাত আটার মধ্যে সেনা, ডায়মন্ড, ফ্রেশ, আফতাবসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আটা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর খোলা ময়দা ৫৫ টাকা, প্যাকেটজাত ময়দা ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে কেজিপ্রতি নেপালি মসুর বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায়। আর মোটা দানার মসুর ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ছবি: সারাবাংলা

বাজারে ও অলিগলির দোকানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিকেজি খোলা সাদা চিনি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১১০ টাকা, লালচিনি ১১৫ টাকা, ছোট মুগডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

দুই কেজির প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, কাজু বাদাম কেজিপ্রতি ১ হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/এনজে
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর