Monday 10 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কিশোরগঞ্জ-২
‘জনপ্রতিনিধিরা চাইলে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটানো সম্ভব’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:১০ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:১০

৩১ দফা সম্লিবলিত ফলেট বিতরণ করছেন মো: নুরুজ্জামান (চন্দন)।

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে মনোনয়ন প্রত‍্যাশী হিসেবে মানুষের মাঝে তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা লিফলেট বিতরণ করার মাধ্যমে জনসংযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় যোদ্ধা মো: নুরুজ্জামান (চন্দন)। তরুনদের ভালবাসা ও আস্থায় এই তরুন ছাত্রনেতাকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

লিফলেট বিতরণের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো: নুরুজ্জামান (চন্দন) বলেন, তারেক রহমানের তথা বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে সুন্দর ও মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। কারন, এর মাধ্যমে কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলো হলো-সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা, একই ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও গণমাধ্যমের পুর্ণ স্বাধীনতার ব্যবস্থা, কৃষকদের জন্য ফার্মাস কার্ড ও নারীদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড পরিকল্পনা এবং এছাড়াও নানা ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্প।

বিজ্ঞাপন

লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘ব‍্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কারন, গ্রামের মানুষ জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপিকে স্বার্থহীনভাবে ভালবাসে এবং তারা চায় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের কাছে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নিক, এটা তারা প্রত্যাশা করে। আমার লিফলেট বিতরণের মূল উদ্দেশ্য হলো ৩১ দফার বিষয়গুলো জনগণ যেন বুঝতে পারে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। আর এই ৩১ দফা তখনই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে যখন বিএনপি সরকার গঠন করতে পারবে। তাই জনগণের কাছাকাছি গিয়ে বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনায় গেলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা তুলে ধরছি।

স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচল হলে বিএনপি কয়টি আসনে জয়লাভ করবে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের কাছে বিএনপি অত‍্যন্ত জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল। তারপরও এখন দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। ফলে আগামী নির্বাচনে ফ্যাক্টর হবে এই তরুণ ভোট। বিষয়টি মাথায় রেখে তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে আমরা সকল প্রার্থীরা মাঠে কাজ করছি। তাছাড়া ভোটের আগে আমি এই সংখ্যাটা বলে এদেশের ভোটারদের ব‍্যক্তিগত অধিকারকে ছোট করতে চাই না। তবে এইটুকু বলতে পারি যে, আমরা ইনশাআল্লাহ সর্বোচ্চ ভোটে সরকার গঠন করার প্রত্যাশা করছি এবং তরুন প্রজন্মের কাছে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে পাশে থাকার আহবান জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের বাস্তবতা এবং এ দেশের নাগরিকদের জন্য অনুপযোগী। জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি সরকারের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং পিআর ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি জনগণের প্রত্যক্ষ চাপ বা জবাবদিহি কম থাকে। এই ব্যবস্থা কোনো দেশ বা সমাজের মধ্যে জাতিগত, ধর্মীয়, আঞ্চলিক বা সম্প্রদায়গত বিভাজন বাড়িয়ে তুলবে। তাছাড়া ইতালি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন পিআর পদ্ধতি গ্রহণ করে ভেবেছিল এটি একটি সুষ্ঠু ও ন্যায্য ব্যবস্থার সূচনা। কিন্তু বাস্তবে তারা এক গভীর রাজনৈতিক অস্থিরতার ফাঁদে পড়েছিল।

মনোনয়ন পেয়ে ভোটে নির্বাচিত হলে কিশোরগঞ্জ নিয়ে নিজস্ব পরিকল্পনা সম্পর্কে মো: নুরুজ্জামান (চন্দন)
সারাবাংলা-কে বলেন, ‘‘মনোনয়ন বা জনসেবা আল্লাহ প্রদত্ত এবং এই বিষয়ে কোনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। তারপরও দল যদি তরুনদের অগ্রাধিকার দেয় এবং সুযোগ পাই, তাহলে কিছু পরিকল্পনা আছে। কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উভয় এলাকার বেশিরভাগই কৃষির নির্ভরশীল। এরপর রয়েছে বৈদেশিক রেমিট্যান্স। এই দুটি শিল্পের উপর ভিত্তি করে চলছে দুটি উপজেলা। কিন্তু সবচেয়ে অবহেলিত হলো এই দুটি শিল্প যেখানে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। পাশাপাশি মাদকের কবল থেকে তরুণদের রক্ষা করে কাউন্সিলিং ও সম্মিলিত আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে কর্মমুখী ট্রেনিং দিয়ে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব।

আমি যদি কখনও দলের মনোনয়ন পেয়ে আমার প্রিয় কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া এলাকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সেবা করার সুযোগ পাই, তাহলে এই দুটি উপজেলার কমন ও প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম ৫টি সমস‍্যার সমাধান করব। সমস্যাগুলো হলো: নিম্নমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা, গতানুগতিক ও অনুন্নত কৃষি ব্যবস্থা, অনুন্নত অবকাঠামো (৭০% কাঁচা রাস্তা-ঘাট), বেকারত্ব সমস্যা ও অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবা।

এগুলো ছাড়াও কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলার সাধারণ কিছু সমস্যা হলো রাজনৈতিক প্রভাব (বিশেষ করে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে), উন্নয়নমূলক কাজে ধীরগতি, পরিবহনখাতে সমস্যা (যেমন সিএনজি-চালিত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও চাঁদাবাজি) এবং সামাজিক সমস্যা, যেমন কিছু এলাকায় অপরাধমূলক কার্যকলাপের উপস্থিতি দিন দিন বাড়ছে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহায়তায় এগুলো দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। কৃষকের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার জন্য কাজ করব। কারণ, পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী ঘেঁষে বহমান পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের বিস্তীর্ণ চরে প্রচুর ফসল আর শাক-সবজি হয়। অত্যন্ত উর্বর এই অঞ্চলে এগ্রো-ইন্ডাস্ট্রি করার জন্য বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করে শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারলে কৃষকরা ফসলের উচ্চমূল্য পাবে এবং অনেক কর্মসংস্থান হবে অতএব এই বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে অরাজনৈতিক স্বনামধন্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সুন্দর সংগঠন গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে আমার। যেটির স্লোগান হবে ‘রাজনীতি যার যার কিন্ত কটিয়াদী- পাকুন্দিয়ার উন্নয়ন সবার।’ কারণ, আমি বিশ্বাস করি সবাই রাজনীতি করবে না বা রাজনৈতিক ছাতার নিচে আসবে না। তাই বেশিরভাগ অরাজনৈতিক মানুষগুলোকে উন্নয়নমূলক কাজে সম্পৃক্ত করতে পারলেই কেবল বৃহৎ পরিসরে উন্নয়ন সম্ভব। সর্বোপরি বলবো, জুলাই বিপ্লবে যেমন তরুন সমাজের ভূমিকায় দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এবার ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে এবং এই তরুণদের হাত ধরেই আগামীর মানবিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এটাই প্রত্যাশা করি।‘’