ঢাকা: ‘ঐক্য, সংগ্রাম, মর্যাদা ও মুক্তির পতাকা হাতে শ্রমিকের রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠা’—এই অঙ্গীকার নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নতুন অঙ্গসংগঠন ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরের ইস্কাটন নেভি কলোনিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়।
সংগঠনটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির, সদস্য সচিব হয়েছেন রিয়াজ মোরশেদ, আর মুখ্য সংগঠক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে আরমান হোসেনের নাম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন শ্রমিকরা। ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলনে নামলে তাদের গুলি করা হয়েছে। শ্রমিকের কোনো অধিকার ছিল না।”
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “যে মাফিয়ারা শ্রমিকদের শোষণ করেছে, লুটপাট করেছে—তাদের এখনো বিচারের আওতায় আনা হয়নি, বরং তাদের প্রোটেকশন দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “জাতীয় ঐক্য তখনই হয়, যখন সমাজের সব শ্রেণির মানুষ দেশপ্রেমের ভিত্তিতে এক হয়ে লড়াই করে—যেমনটি দেখা গিয়েছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে।”
নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেন, “স্বাস্থ্য, শ্রম বা গণসেবামূলক খাতের সংস্কার নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। কেবল নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতিফলন নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যে দিনে কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে, সেই দিনেই জাতীয় শ্রমিক শক্তি রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানাচ্ছে। আমরা জানি, রাজপথের শক্তিই জয়ী হয়।”
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “বাংলাদেশে শ্রমিকদের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্য করা হয়। জাতীয় শ্রমিক শক্তি এই বৈষম্য দূর করতে কাজ করবে।”
শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিগত কয়েক বছরে হাজারো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে, কিন্তু তাদের হত্যার বিচার হয়নি। বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
এছাড়াও, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন এবং শ্রমিক শক্তিকে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।