Saturday 18 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুনামগঞ্জে নদী রক্ষায় ৬ দফা দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২১ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:১৭

নদী রক্ষার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি: সারাবাংলা

সুনামগঞ্জ: প্রকৃতি-পরিবেশ, মানুষের জীবন-জীবিকা ও প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষায় সুনামগঞ্জের ধোপাজান, যাদুকাটা, চিলাই, খাসিয়ামারাসহ জেলার সব নদ-নদী থেকে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে দিকে শহরের আলতাফ স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট) এলাকায় এই সমাবেশের আয়োজন করে ‘হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন সুনামগঞ্জ’’।

আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাহিদুল ইসলাম মজনু। সমাবেশে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ওবায়দুল হক মিলন।

বিজ্ঞাপন

এসময় আরো বক্তব্য দেন সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, অ্যাড. আনিসুজ্জামান, হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলনের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল মুন্সী, সদস্য মিজানুল হক সরকার, সুমন পাল, মাইনুদ্দিন, কর্ণবাবু দাশ, শাহ মোশাহিদ আলম ফয়সল, দবির মিয়া, সদর উপজেলার আহ্বায়ক নুরুজ্জামান জুয়েল, যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন, ফারুক আহমেদ, পৌর শাখার আহ্বায়ক আফিকুজ্জামান রিপন, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মতিন, আশরাফুজ্জামান বাবলু, শফিউল আলম, হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলনের শান্তিগঞ্জ উপজেলার আহ্বায়ক ইমদাদ হোসেন, শাল্লা উপজেলার সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন, দোয়ারা বাজার উপজেলার সদস্য মোফাজ্জল হাসান।

বক্তারা বলেন, হাওর ও নদীনির্ভর সুনামগঞ্জের মানুষ আজ অস্তিত্ব সংকটে। বছরের পর বছর ধরে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট নদী থেকে নির্বিচারে বালু-পাথর তুলছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, তীর ভাঙনে কৃষি জমি ও বসতভিটা হারাচ্ছে মানুষ। হাওরের প্রতিবেশ ব্যবস্থাও বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের নীরব ভূমিকা ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে অবৈধ উত্তোলনকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নদী-হাওর রক্ষার নামে মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হলেও তা কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে।

বক্তারা বলেন, সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার অঙ্গীকার করলেও মাঠপর্যায়ে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। নদী ধ্বংসের এই প্রবণতা যদি এখনই বন্ধ না করা যায়, তবে অচিরেই সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। সমাবেশ থেকে ধোপাজান নদী থেকে ভিটেবালু উত্তোলনের অনুমোদন বাতিল, বালু-পাথর লুটপাটে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, দোয়ারা বাজারের চিলাই ও খাসিয়ামারা নদীতে অবৈধ উত্তোলন বন্ধ, জেলার প্রতিটি খনিজ সম্পদ এলাকায় ট্রাস্কফোর্স গঠন এবং নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা আরও দাবি করেন, প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে এই অবৈধ ব্যবসা থামানো সম্ভব নয়। তারা বলেন, নদী শুধু পানি বহন করে না, এটি হাওরাঞ্চলের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও জীবনের প্রতীক। তাই নদী বাঁচলে মানুষ বাঁচবে, প্রকৃতি টিকে থাকবে।

সমাবেশের নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বালু-পাথর উত্তোলনের নামে যে ‘প্রাকৃতিক ডাকাতি’ চলছে তা এখনই বন্ধ করতে হবে। এই অব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, আগামী দিনে যদি তাদের ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হয়, তবে তারা জেলাজুড়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর