ইবি: মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবির। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ‘ডাকসুতে শিবির, জাকসুতে শিবির, রাকসুতে শিবির, চাকসুতে শিবির’, ‘আমরা কারা শিবির, তোমরা কারা শিবির’, ‘মেধাবীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আপোশ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনিদের খোঁজ নাই’, ‘ইকসু নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’ বলে স্লোগান দেয়।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো, দ্রুত ছাত্র সংসদের নীতিমালা ও রোডম্যাপ প্রদান, ডিজিটাল পেমেন্ট নিশ্চিতকরণ, অনতিবিলম্বে সাজিদ হত্যার বিচার, দ্রুত ছাত্রসংসদের নীতিমালা ও রোডম্যাপ প্রদান এবং নির্মাণাধীন হলসমূহ চালু করা।
শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনও ডিপার্টমেন্ট আছে, যে ডিপার্টমেন্টে ব্যাচ সংখ্যা হচ্ছে পাঁচটি কিন্তু তাদের শিক্ষক মাত্র দুইজন বা তিনজন। আপনারা বলছেন সেশনজটকে জাদুঘরে পাঠাবেন, আপনারা বলছেন সেশনজট মুক্ত করবেন, কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে কীভাবে সেশনজট মুক্ত হবে? ১৫ বছরে যারা শাহবাগকে এসটাব্লিশ করে এদেশের আইন-কানুন, এদেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তাদেরকে আমরা শিক্ষক হিসেবে চাই না। যারা গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছে, যারা গণহত্যার পক্ষে সাফাই দিয়েছে, তাদের থেকে আমরা শিক্ষা নিতে চাই না, যারা আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য জান-প্রাণ বাজি রেখে কাজ করেছে, তাদেরকে আমরা শিক্ষক হিসেবে চাই না। আমরা মেধা ও স্বচ্ছতারভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ চাই।’
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ইন্টেলিজেন্স কি এতো দুর্বল হয়েছে? ৯০ দিন হয়ে গেল একজনের হত্যাকারীকে এখনো আপনারা বের করতে পারছেন না। এখনো পর্যন্ত খুনিদেরকে বের করা যায় নাই, এটা আমরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ব্যর্থতা বলব না, এটা ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের ব্যর্থতা। ইন্টেরিমকে আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা এটাকে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এর পিছনে কী রহস্য? জাতির সামনে উন্মুক্ত করতে হবে।’
ইকসু সম্পর্কে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কেন ছাত্র সংসদের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ এখনো গ্রহণ করতে পারেনি? আপনারা বলেছেন, ১৫ তারিখের মধ্যে আপনারা নীতিমালা ফাইনাল করবেন। কিন্তু কই! আজকে তো ১৮ তারিখ চলছে। আর কত সময় নিবেন? আপনাদেরকে বলতে চাই, যদি ছাত্র সংসদ নিয়ে কোনো টালবাহানা চলে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে।’
এসময় পেমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোনো বিল পে করতে যাওয়া হয়, পে করার ইচ্ছা যদি কেউ করে, তাহলে তার জুতা ক্ষয় হয়ে যায়। আমরা কয়েকটা ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি, ব্যাংকের হেড অফিসের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাদেরকে জানিয়েছেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকে, মাত্র ২১ দিন সময় লাগবে পেমেন্ট সিস্টেমকে ডিজিটাল করতে। আপনারা যদি না পারেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলুন, আমরা পঁচিশ দিনের মধ্যে পেমেন্ট সিস্টেমকে ডিজিটাল করবো। শুধুমাত্র সাত দিন সময় দিচ্ছি, এর মধ্যে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ পেমেন্ট সিস্টেমের ব্যাপারে গ্রহণ করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার কেউ অফিস করতে দেওয়া হবে না।’
নির্মাণাধীন হল সম্পর্কে বলেন, ‘হল টেন্ডার দেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালে, তারপরে এগুলোর কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালে, আর এখন হচ্ছে ২০২৫ সাল। এখনো পর্যন্ত হলগুলো কবে উদ্বোধন হবে তা কেউ জানে না, ৮ বছর হয়ে যাচ্ছে শুধু হলের নির্মাণ কাজ। এ বছর আপনারা সবগুলো হলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের হাতে হলগুলো বুঝিয়ে দিতে হবে এবং হলের সিট অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে।’