ঢাকা: বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে শ্রম সহযোগিতাসহ বেশ কিছু খাতে শিগগির নতুন চুক্তি হবে বলে জানিয়েছেন কুয়েত-এর এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত সামি ঈসা জোহর হায়াত।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন-এর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা জানান। এ সময় কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আলির একটি চিঠিও হস্তান্তর করেন তিনি।
এ চিঠিতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রম সহযোগিতা নবায়নের বিষয়ে নতুন চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি চলছে, যা আগামীতে কুয়েত সরকারের উচ্চপর্যায়ের সফরকালে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের আগে বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের রাজনৈতিক পরামর্শ বৈঠক বা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কুয়েত প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সামি ঈসা জোহর হায়াত। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলাম।
এফওসি বৈঠকে রাষ্ট্রদূত সামি ঈসা জোহর হায়াত বলেন, কুয়েত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। আর এই প্রথম আমরা দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক পরামর্শ সভা করলাম। বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা আমাদের যৌথ এজেন্ডার নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছি। দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার ও বহুমাত্রিক সহযোগিতায় রূপ দিতে বৈঠকে নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উভয়পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
তিনি জানান, বৈঠকে খাদ্য নিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি, সামরিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান- এসব খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সামি ঈসা জোহর হায়াত বলেন, আমরা বেশ কিছু খাতে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণে একমত হয়েছি এবং শিগগির একাধিক নতুন চুক্তি সই করা হবে।
বৈঠকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও ফ্লাইট বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানান কুয়েতের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমানে কুয়েত এয়ারওয়েজ সপ্তাহে ৭টি, আল জাজিরা এয়ারওয়েজ ১৪টি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে আরও নতুন রুট ও ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছি, যা খুব শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে।
জানা যায়, ২০০৬ সালে এ পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হলেও এবারই প্রথম এফওসি অনুষ্ঠিত হলো। দুই দেশ ভবিষ্যতে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে এসব আলোচনাকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে।