ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ছাত্রদের কয়েকটি দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদগুলোতে নির্বাচন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চারটিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ছাত্রসংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন। এসব নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। আর তাদের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল। তবে, বাংলাদেশের বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের এই পরাজয়ের কারণ খুঁজছে রাজনৈতিক সচেতন মহল।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু)-এর ২৮ পদের ২৫টিতে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু)-এর ২৫টির মধ্যে ২০টিতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু)-এর ২৬ পদের ২৪টিতে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু)-এর ২৩ পদের মধ্যে ২০টিতেই ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। এই জয়কে অনেকেই বলছেন ভূমিধ্বস বিজয় বলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন শিবিরের এই বিস্ময়কর উত্থান? আর শিবিরকেই কেন বেছে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা? এটা কি শিবিরের কৌশল, না কি ছাত্রদলের ব্যর্থতা?
শিবিরের রাজনীতি ও ছাত্রসংসদ নির্বাচন
সূত্র বলছে, অন্যান্য ছাত্রসংগঠন থেকে অনেকটা আলাদা ছাত্রশিবির। সংগঠনটির মূল বিউটি হলো ডিসিপ্লিন। কৌশলী, বৈচিত্র্যময় ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনানির্ভর রাজনীতি। সারাদেশব্যাপী সংগঠনটির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে ফোকাস, রেটিনা, উন্মেষসহ বেশ কয়েকটি ভর্তি কোচিং সেন্টার। উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরুনো অজপাড়া গাঁ থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীকে টার্গেট করে শিবির। এসব কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নানাভাবে সহায়তা করে সংগঠনটি। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ফ্রিতে ভর্তির সুযোগ দেয়। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়ও শিক্ষার্থীদের গাইড করেন শিবির নেতারা। ভর্তির ফরম কেটে দেওয়া, কোথায় সিট পড়েছে বের করে দেওয়া, কী ধরনের প্রশ্ন আসবে তা বাতলে দেওয়া। আর এসব কোচিং সেন্টার থেকেই বেশির ভাগ মেধাবী শিক্ষার্থী বুয়েট, মেডিক্যাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পান। এতে সংগঠনটির নেতাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারও একটা প্রতিফলন ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনগুলোতে।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে শিবিরের রয়েছে ফেসবুক গ্রুপ। নানা নামে রয়েছে আইডি। এসব গ্রুপ ও আইডির রয়েছে লাখ লাখ ফলোয়ার। যেকোনো ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচার সহজেই বিরোধীদের ঘায়েল করেছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রসংগঠনগুলো। অপরদিকে শিবিরের কৌশলের বিপরীতে পালটা কোনো কৌশলই নিতে পারেনি প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল। কমিটিতে মেধাবীদের জায়গা নেই। তার ওপর গত ১৭ বছর ঢাবি ক্যাম্পাসেই প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রদল। ঢাবি, জাবি, চবি, রাবি’র কোনো হলেই কার্যক্রম ছিল না। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কোনো সিনিয়র নেতার ছাত্রত্ব নেই। কনিষ্ঠ অপরিচিতদের প্রার্থী করা হয়েছে। পুরো প্যানেল দিতে পারেনি অধিকাংশ হলে। তার ওপরে ডাকসু নির্বাচনের আগে হল কমিটি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে সংগঠনটি।
শিবিরের কাছে ছাত্রদলের পরাজয়ের কারণ
সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই ভূমিধ্বস বিজয় খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এটিতে অবাক হবার কিছু নেই। কারণ, দিনের পর দিন শিবির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের কর্মকাণ্ড গোপনে চালিয়ে এসেছে। যেটা ৫ আগস্টের পরে প্রকাশ্যে আসে। ফলে গোপন আর প্রকাশ্য মিলে একাকার হয়ে গেছে। অপরদিকে ২০০৯ সালের পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজে কার্যক্রম চালাতে পারেনি ছাত্রদল। মামলা-হামলা গ্রেফতারের ভয়ে অনেকে ছিলেন আত্মগোপনে। অবশ্য ছাত্রদলের ভরাডুবির পেছনে দলীয় কোন্দলকেও দায়ী করছেন কেউ কেউ। ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে কোনো গ্রুপিং বা কোন্দল নেই। কিন্তু ছাত্রদলের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ আছে। কে কার লোক- এমন আলোচনাও আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনগুলোতে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা সব গ্রুপকে এক করে নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারেনি- এটাও তাদের ব্যর্থতা।
চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রদলের বেশিরভাগ প্রার্থী শিবিরের প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্রসংগঠন কেন একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন শোচনীয়ভাবে হারছে? এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রদলের ভরাডুবির পেছনে অনেক কারণ আছে। ৫ আগস্টের পর যখন বিএনপির সুদিন ফিরে আসে তখনই শুরু হয় কমিটি বাণিজ্য। দেশব্যাপী বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি হচ্ছে টাকার বিনিময়ে। ফলে এসব কমিটি যা করার তাই করছে। কমিটিতে যে অন্য দলের কেউ ঢুকে পড়ছে না এটা কীভাবে বুঝব? কমিটি বাণিজ্যের কারণে দলের প্রকৃত নেতা-কর্মীরাই বঞ্চিত হচ্ছে।’
কারচুপির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ধরে নিলাম ছাত্রদলের অভিযোগ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনগুলোতে কারচুপি হয়েছে। ঠিক আছে, তর্কের খাতিরে মেনে নেই যে, হ্যাঁ কারচুপি হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো- শিবির যদি কারচুপি করতে পারে, তাহলে ছাত্রদল পারছে না কেন? অথচ সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে নির্বাচন পরিচালনায় জড়িত শিক্ষকদের একটি বড় অংশতো বিএনপিপন্থী। তাহলে তাদের সামনে শিবির কারচুপি করতে পারছে কীভাবে। এটা কি ছাত্রদল ধরতে পারছে না?’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যা বলছেন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে পাওয়ার পলিটিক্স। অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি। ক্যাম্পাসে আধিপত্য নিয়ে মারামারি-খুন। তুচ্ছ ঘটনায় পড়েছে লাশ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দাদাগিরি, হলের সিট নিয়ন্ত্রণ, প্রকাশ্যে বাণিজ্য, গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি, ভর্তি কোটায় বৈষম্য। প্রচলিত রাজনীতির এসব ধারা দেখে বর্তমান প্রজন্ম আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অনেকটা বিরক্ত এই প্রজন্মের তরুণরা। এছাড়া, যে ন্যারেটিভের ওপর দাঁড়িয়ে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে সেই একই রাজাকার কার্ড দিয়ে বিরোধীরা চালিয়েছে প্রচার। এতে হয়েছে হিতে বিপরীত। এছাড়া ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ধর্মভীরু। এতদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে আসা ছাত্রসংগঠনগুলো এসব বিষয়ে ছিল উদাসীন। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্লেষকরা জানান, যারা ভোট দিয়েছেন তারা যে সবাই শিবিরের আদর্শ চিন্তা করে ভোট দিয়েছেন তা নয়, তারা ক্যাম্পাসে দখলদারীর ছাত্র রাজনীতির আশঙ্কা থেকে ভোট দিয়েছেন। কারণ, তারা অতীতে অনেক ছাত্রসংগঠনের দখলদারিত্বের রাজনীতি দেখেছেন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখেছেন। এসব তারা পছন্দ করেননি। কেউ কেউ মনে করেন, দশকের পর দশক ধরে ইসলামী ছাত্রশিবির তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত সাংগঠনিক শ্রম দিয়েছে। এতদিন ধরে তারা যে কৌশল প্রস্তুত করেছে, তার চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের মধ্য দিয়ে। আর এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় অর্জন করছে। এর প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়তে পারে বলে ধারণা কারও কারও।
ছাত্রদল-শিবির নিয়ে শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাবেকদের ফেসবুক মন্তব্য
ছাত্রদলের এই ভরাডুবির পর তাদেরই একজন শুভাকাঙ্ক্ষী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আবিদ_ তুমি হেরে গেছো তোমার দলের সিনিয়র নেতাদের কারণে। তারা ২৪ এর গণহত্যার বিচার চায় না। তারা গুম-খুনের বিচার চায় না। তারা আওয়ামীদের নিষিদ্ধ চায় না। তারা ২৪ এর স্বাধীনতা মানে না। তারা আওয়ামীদের পক্ষে কথা বলে। তারা এখন শাহবাগী এবং হিন্দুস্তানিদের ফাঁদে পা দিয়েছে। এসব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পছন্দ করেনি। রুমিন ফারহানা এবং ফজলুর রহমানদের বেপরোয়া কথার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে। বিএনপির হাই কমান্ড দায়ী আবিদ ছেলেটার ফেল করার জন্য। আফসোস হয় আবিদের জন্য। ওই সকল বেপরোয়া নেতা-নেত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সকল নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের পরাজয় হবে। ১০০% শিউর।’
চার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি মির্জা গালিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘চাকসুতে ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি শিবিরের প্যানেল পাইছে, আর রাকসুতে ২৩ এর মধ্যে ২০। ছাত্রদল ডাকসু, জাকসু, চাকসু, রাকসু-সব মিলায়ে পাইছে শুধু একটা এজিএস। এই যে সারা দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ-তরুণীদের একচেটিয়া সাপোর্ট পাইতেছে শিবির-এইটা এক নতুন বাংলাদেশের গল্প বলতেছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘অছাত্র, বয়স্ক ছাত্র, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, চিৎকার চেচামেচি করা পুরাতন রাজনৈতিক স্টাইল দিয়ে আর রাজনীতি করা যাবে না। শিবিরকে হারাইতে হলে মেধাবী হইতে হবে, ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কনস্ট্রাকটিভ রাজনীতি করতে হবে, আর দেখতে শুনতেও ব্যক্তিত্ববান কিউট সুইট টাইপের হইতে হবে। গুণ্ডা গুণ্ডা ভাব থাকলে আর হবে না। এমন এক বাংলাদেশই তো আমরা চাইছিলাম আমাদের সারাটা জীবন ধরে।’
যা বলছেন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতারা
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কোনো মোনাফেক সংগঠন না। তারা কখনো গুপ্ত রাজনীতি করেনি। বিগত ১৬ বছর তারা স্কুল-কলেজে সংগঠন শক্তিশালী করতে পারেনি। এ সময় তারা জাতীয় রাজনীতিতে থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রদল সোচ্চার ছিল। হাসিনার পতনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভালো ফলাফল করতে পারেনি। অপরদিকে ইসলামী ছাত্র শিবির বিভিন্নভাবে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেছে। কেউ গুপ্তভাবে, কেউ ছাত্রলীগের ভেতরে থেকে সংগঠন করেছে।’
জাতীয় রাজনীতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন কোনো প্রভাব পড়বে না দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের মানুষ সবসময় বিএনপির পাশে ছিল। তারা দেখেছে আমরা কীভাবে হামলা-নির্যাতনের মধ্যেও তাদের পাশে ছিলাম। সেই বিবেচনায় তারা তারেক রহমানের ৩১ দফার প্রতি আস্থা রেখে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিজয়ী করবে।’
ছাত্রসংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি করিম প্রধান রনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রদলের কেন ভরাডুবি হয়েছে এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি কমিটি হয়েছিল, তাদের সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে।’
তখন কথা হয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা প্রতিপক্ষের মতো প্রতারণার রাজনীতি করি না। তাদের প্রতারণাই হোক, আর কৌশলই হোক- এর যেকোনো একটি অথবা দু’টির কারণেই আমরা বিজয়ী হতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাবির ভিপি-জিএস যারা হয়েছে তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা যেভাবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি করেছে সেভাবে আমরা পারিনি। তাছাড়া ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে। তারপরও চট্টগ্রামে আমরা অনেক এগিয়েছি। আশা করি সামনে ভাল করব। ছাত্রদল অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে।’
বিএনপির কর্মকাণ্ড ছাত্রদলের ওপর প্রভাব পড়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এমনটা মনে করি না। তবে বর্তমানে শিক্ষার্থীরা শুধু ক্যাম্পাস নিয়ে ভাবে না। বাইরের সব বিষয়ে ধারণা রাখে। রাজনীতির প্রভাব সবকিছুর ওপরে থাকে এটাই স্বাভাবিক।’