ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি)-এর সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে জুলাই আন্দোলনের সময় লুট হওয়ার অস্ত্রের ৮৫ শতাংশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অবশিষ্ট অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান এখনো চলমান রয়েছে বলে জানান তারা।
এ প্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে ইসি।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁস্থ নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ইসি’র পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনসহ চার নির্বাচন কমিশনার ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তৎপরতা বাড়নোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সচিব বলেন, বৈঠকে লুট হওয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধারের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন যে, এখন পর্যন্ত তারা ৮৫ শতাংশ অস্ত্র রিকভারি করেছেন। আরও কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো বাইরে আছে। এগুলোর উদ্ধার প্রক্রিয়া চলমান আছে।
তিনি বলেন, পুলিশের বডি ওন ক্যামেরা থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া অন্য কেউ ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে না। তারা বলেছেন, যানবাহন একটা সমস্যা, কিছু গাড়ি রিকুইজিশন করতে হবে।
ইসি সচিব বলেন, আজকে সূচনা হলো আলোচনার। এটা ধারাবাহিকভাবে আরও এগোবে। আরেকটা বড় জিনিস আছে, সেটা হচ্ছে- বাজেট। প্রত্যেকটা অর্গানাইজেশন, প্রত্যেকটা ইউনিটের একটা বাজেট, তাদের খরচ আছে, সেটা আমাদের দেবে, আমরা ইলেকশন বাজেটের সঙ্গে যেটা সম্পর্কিত সেই বাজেট করব।
সচিব বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে ভোটের সামগ্রী আনা-নেওয়ার হেলি কপ্টার ব্যবহারের বিষয়টিও আলোচনায় হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার কথা হয়েছে। এছাড়া আর্মি এভিয়েশন এয়ারফোর্স হেলিকপ্টার করে নির্বাচন সামগ্রী পরিবহনের দায়িত্ব নেবে। যে সমস্ত জায়গায় এসটি হবে, সেখানে যেন হ্যালিপ্যাডগুলোর একটা ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সহজে অবতরণ উত্তরণ এবং অবতরণ করা যায়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার নিয়ে ইসি সচিব বলেন, এআই-এর অপব্যবহারের ক্ষেত্রে এনটিএমসি যে ব্যবস্থাটা নিয়েছিল পূজার সময়; ৩৫ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপে ওনারা তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারটা করেছেন। ওটা একটা সাকসেসফুল ইভেন্ট ছিল। সেটা আমরা ব্যবহার করতে পারি কি না, সে আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে একটা সেমিনার আছে। সেটাতে আমরা আরও কিছু তথ্য সমাবেশ করে এই জিনিসটা দেখব।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি লেফট্যানেন্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, বিমানবাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধি এয়ার ভাইস মার্শাল রুশাদ দিন আসাদ, নৌবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান, এনএসআই-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ, ডিজিএফআই-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, র্যাব’র মহাপরিচালক একেএ মশহিদুর রহমান, এসবির অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও অর্থ) জিএম আজিজুর রহমান এবং সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. ছিবগাত উল্ল্যাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।