ঢাকা: পরিসংখ্যান অনুকূলে না থাকলে তা প্রকাশ করা হয় না- বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
বিশ্ব ও জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস উপলক্ষে সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, পরিসংখ্যান অনুকূলে থাকলে প্রকাশ করা হয়। আবার অনুকূলে না থাকলে প্রকাশ করা হয় না। এভাবে অর্ধসত্য প্রকাশিত হয়। আবার বিভিন্ন পদ্ধতিগতভাবে পরিসংখ্যান তৈরি করতে গিয়ে যেটা ভালো দেখায়, সেটা প্রকাশ করা হয়। এভাবে পরোক্ষ অপব্যবহার হয়।
উদাহরণ হিসেবে অনেক পুরনো একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে একবার ধানের উৎপাদন কত হবে, সেটা নিয়ে কথা হয়। তখন স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে তথ্য ব্যবহার করা হয়, যার মাধ্যমে উৎপাদন বেশি দেখানো যায়।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও বলেন, সরকারি পরিসংখ্যান রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয় কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। আসলে পরিসংখ্যানে কারচুপি হয় না, পরোক্ষ অপব্যবহার আছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর স্বাধীনতা নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বিধিমালা সংশোধন করার মাধ্যমে বিবিএস-কে স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে। এতে অনুমতি ছাড়াই পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে পারবে বিবিএস। আগে যেসব পরিসংখ্যান প্রকাশের আগে মন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যেতে হতো। এখন আর কাউকে দেখানোর প্রয়োজন হবে না।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিবিএস-এর মহাপরিচালক মিজানুর রহমান।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, পরিসংখ্যান এখন সমাজের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যার কিছুটা সংগত আর কিছুটা হয়তো সঙ্গত নয়।
তিনি বলেন, পরিসংখ্যানের মান একমাত্রিক কোনো বিষয় নয়। মানসম্মত পরিসংখ্যান তৈরির জন্য মানসম্মত প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষ জনবল প্রয়োজন হয়। তাই শুধু মান চাইলে হবে না, পর্যাপ্ত অর্থায়ন লাগবে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আজ হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর মতে, বিবিএস-এর বর্তমান প্রকল্পের সংস্কৃতি সংস্থাটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিভিন্ন জরিপ পরিচালনার জন্য স্থায়ী অর্থায়ন প্রয়োজন।