Tuesday 21 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কোর্টের বারান্দায় দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে নিঃস্ব হয়ে গেছি’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৫৪

জমি দখল ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: সারাবাংলা

পটুয়াখালী: মৎস্য বন্দর মহিপুর থানার ধূলাসার ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামের অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জমি দখল ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল দশটার দিকে ছোনখোলা ও তারিকাটা এলাকার সাধারণ জনগণের আয়োজনে নয়াকাটা বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় দুই শতাধিক ভুক্তভোগী অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সাধারণ মানুষের জমি আত্মসাৎ করে আসছেন। তিনি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে স্থানীয়দের হয়রানি করছেন। ইতোমধ্যে ৩০টিরও বেশি চাঁদাবাজি ও জমি দখল সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী হারুন মৃধা বলেন, ‘আমাদের হরেন্দপুর মৌজার ৫ একর জমি বহু প্রজন্ম ধরে ভোগদখলে রয়েছে। কিন্তু আনোয়ার উকিল ভুয়া দলিল দেখিয়ে সেই জমি নিজের নামে নিতে চায়। এরপর একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি, আমি আর পারছি না। কোর্টের বারান্দায় দৌড়াতে দৌড়াতে আমি পাগল হয়ে গেছি। আনোয়ারের মিথ্যা মামলা থেকে আমি বাঁচতে চাই।’

আরেক ভুক্তভোগী ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোর্ট-কাচারিতে ঘুরতে ঘুরতে নিঃস্ব হয়ে গেছি। তবু ন্যায়বিচার পাই না। প্রশাসনের কাছে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

ভুক্তভোগী মিরাজ হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে নিজের ঘেরের মাছ নিজে ধরে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এর আগেও ২৫-৩০টা মামলা দিয়েছে। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ, ন্যায়বিচার চাই।’

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৌলতলী মৌজার প্রায় ৫ একর জমি মোকলেছুর রহমানের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশগণ—দুলাল, জাফর, জামাল, খলিল, খালেদা, পারভীন, কুলসুম, রাবেয়া, সাফিয়া, জাহেদা, সোহাগ ও মোর্শেদা—আইনগত মালিক।

এছাড়া, হরেন্দপুর মৌজার ৫ একর জমির মালিক ইউসুফ মুন্সী পরিবারের সদস্যরা—ইদ্রিস, মরিয়ম, তহমিনা, মোকসেনা, নাসিমা, আসমা ও হারুন মৃধা।

অভিযোগ রয়েছে, আনোয়ার উকিল এসব জমির খতিয়ান ও রেকর্ড জালিয়াতি করে নিজের নামে রেকর্ড করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বৌলতলী মৌজার ৩২/৩৯ খতিয়ান নম্বর ৩১৬৪, ৩১৭৭ থেকে ৩১৮৬ পর্যন্ত এবং হরেন্দপুর মৌজার খতিয়ান নম্বর ৭০২-৩ সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে চলমান।

স্থানীয়রা জানান, আনোয়ারের বিরুদ্ধে কথা বলায় খলিল, জাহাঙ্গীর, ইদ্রিসসহ প্রায় ৩০ জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের ঘেরের মাছ ধরে ফেলার অভিযোগে স্থানীয়দের নামে ৩০ লাখ টাকার একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এমনকি নিজের চাচাকেও ছাড় দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন কোর্টে আছি। এরপর তিনি সংযোগ কেটে দেন।’

মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত করে অ্যাডভোকেট আনোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর