Tuesday 21 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৬০টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত হচ্ছে প্লে-গ্রাউন্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:১৫ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:০৫

শিশু শিক্ষার্শীদের সঙ্গে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক। ছবি: সারাবাংলা

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের আনন্দ ও বিনোদনের সঙ্গে লেখাপড়া নিশ্চিত করা এবং স্কুল থেকে শিশুদেরকে ঝরে পড়া রোধ করতে জেলার ১২টি উপজেলার ১৬০টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত হচ্ছে প্লে-গ্রাউন্ড।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এরইমধ্যে ১২টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মাধ্যমে তাদের নিজ উপজেলার নির্ধারিত স্কুলগুলোতে মোট ১৬০টি প্লে-গ্রাউন্ড নির্মিত হচ্ছে। এর ফলে খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী, সুখী, দলবদ্ধভাবে কাজ করার দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার সক্ষমতা ও দৃঢ় মানসিকতা সম্পন্ন হয়ে উঠবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নে খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই মিনি পার্কের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেওয়ান আসিফ পেলে,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাহাব উদ্দিন, জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, প্রতিটি শিশু অমূল্য এবং সম্ভাবনাময়। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের পর্যাপ্ত বিনোদনের সুযোগ নেই অনেক ক্ষেত্রে । শিশুদের যত্নের সঙ্গে বিকশিত হবার সুযোগ দিলে ভবিষ্যতে তারা নিজেকে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি দক্ষ ও সক্ষম জনগোষ্ঠী হিসেবে তৈরি করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে ‘বিশ্বকে বদলে দিতে, বিকশিত হই আনন্দের সঙ্গে’-এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশুদের ঝরে পড়া রোধ করতে এবং শিশুদের আনন্দের সঙ্গে পাঠদান সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এরইমধ্যে প্লে-গ্রাউন্ড নির্মাণ করতে ১৫টি স্কুল নির্বাচন করা হয়েছে। স্কুলগুলো হলো-করটিয়া খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোদালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হুগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগবাড়ি চৌবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বহুলি মাকোরকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুবর্ণতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাকতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিদির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,আলিশাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আগবিক্রমহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বড় বেলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খোর্দ্দযোগিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন মিয়া জানান, এরইমধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্লে-গ্রাউন্ড নির্মাণের করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের আনন্দের সঙ্গে লেখাপড়া নিশ্চিত করতে এবং স্কুল থেকে শিশুদেরকে ঝরে পড়া বন্ধ করতে নির্ধারিত প্রতিটি স্কুলে প্লে-গ্রাউন্ড হিসেবে দোলনা, স্লাইড, সীস, ও মানচিত্র থাকবে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের আরও প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।

জেলা প্রশাসক শরীফা হক জানান, ‘শিশুদের আনন্দের সঙ্গে বিকশিত হবার সুযোগ দিলে ভবিষ্যতে তারা নিজেকে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি দক্ষ ও সক্ষম জনগোষ্ঠী হিসেবে তৈরি হতে পারে। এছাড়াও খেলাধুলা শিশুদের আত্মবিশ্বাসী, সৃজনশীল, টিম ওয়ার্ক, সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা বাড়ায় ও দৃঢ় মানসিকতাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিটি স্কুলে বাংলদেশের মানচিত্র সম্বলিত ম্যুরাল নির্মাণেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে একটি আনন্দময় শৈশব উপহার দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’

তিনি আরো জানান, জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এবং তাদের মেধার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ‘একটি শিশু একটি স্বপ্ন ফুলের সঙ্গে বিকশিত হোক আগামীর প্রজন্ম’-এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জেলার এক হাজার ৬২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনটি করে দৃষ্টিনন্দন ফুলের গাছ (কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু) মোট চার হাজার ৬৯টি গাছ রোপণ করেছেন জেলা প্রশাসক। যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর