ঢাকা: সাবেক সেনাপ্রধান জেনাবেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আরও ১ থেকে ২ বছর ক্ষমতায় থাকবে। তারপর নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার ( ২০ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ধারাবাহিক পোস্টের শেষ পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, “এই বিশ্লেষণ সম্পূর্ণভাবে আমার নিজস্ব চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভর করে রচিত। এর মূল ভিত্তি গড়ে উঠেছে ৫ আগস্টের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ এবং তার বহুমাত্রিক সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে। ‘জুলাই সনদ’, সাংবিধানিক সংস্কার এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন—সবকিছুই আজ ৫ আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে নতুন দিকনির্দেশনা পেয়েছে।”
সাবেক এই জেনারেল বলেন, আগামী নির্বাচনে ক্ষমতা আসার পর বিএনপি পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারবে কি না—তা নির্ভর করবে কিছুটা ভারতের কৌশলগত অবস্থানের ওপর এবং কিছুটা আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন ও শক্তি সঞ্চয়ের ওপর। যদি বিএনপি তার বিরুদ্ধে পরিচালিত পরিকল্পিত সহিংসতা-বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হয় তবে ১/১১-র পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
ইকবাল করিম ভূঁইয়া বলেন, অদক্ষতা/আইন-শৃঙ্খলা অবনতির কারণে অথবা ছাত্রচাপের মুখে সংস্কার-মিশনে হাত দিলে, নির্বাচন না হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকবে। তখন দুর্বল মন্ত্রীরা বদলাবে এবং ড. ইউনুসকে প্রেসিডেন্ট করে ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, সংবিধান বদলের ক্ষীণ গুঞ্জন উচ্চকিত হলে—আগামী পাঁচ বছর যাবে গণপরিষদের নির্বাচন, সংবিধান প্রণয়ন ও গণভোটে। যাই ঘটুক, এই পাঁচটি বছর দেশকে বাস করতে হবে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, প্রতিবাদ, আন্দোলন, হরতাল-অবরোধ, সহিংসতার ভেতর দিয়ে। পঙ্গু অর্থনীতি দরিদ্রদের আরও বিপদ ফেলবে এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ ক্রমাগত পেছাতে থাকবে।
তিনি বলেন, “আমার এই বিশ্লেষণ রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান কিংবা বিভিন্ন মতাদর্শের সঙ্গে নাও সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে—এটিই গণতান্ত্রিক সমাজে স্বাভাবিক বিষয়। তবুও আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বিষয়টি পেশাদার নিরপেক্ষতা ও বাস্তব মূল্যায়নের আলোকে উপস্থাপন করতে। এখানে ব্যক্তিগত বিশ্বাস, দলীয় আনুগত্য বা রাজনৈতিক পক্ষপাতের কোনো প্রভাব নেই, শুধুমাত্র ঘটনার যৌক্তিক বিশ্লেষণই এই লেখার মূলভিত্তি।”