Tuesday 21 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শার্শা সরকারি মহিলা কলেজ ও ‘আমরা নারী’র উদ্যোগে স্তন ক্যানসার সেমিনার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৫ ২০:১৬

স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতামূলক সেমিনার

ঢাকা: অক্টোবর মাস বিশ্বব্যাপী পিঙ্ক মান্থ বা স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস হিসেবে পালিত হয়।

এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) যশোর জেলার শার্শা উপজেলা প্রশাসন, শার্শা সরকারি মহিলা কলেজ, ‘আমরা নারী’ এবং এর সহযোগী সংগঠন ‘আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর যৌথ উদ্যোগে কলেজ অডিটোরিয়ামে একটি সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ক্যানসার সার্জন ও বিশেষজ্ঞ ডা. বনি আমিন বলেন, ‘সচেতনতা ও প্রাথমিক প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় সুরক্ষা। স্তন ক্যানসার নারীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার অন্যতম বড় প্রতিবন্ধক। এটি তখন তৈরি হয়, যখন স্তনের কোষগুলো স্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রক্রিয়া হারিয়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে এবং একসময় টিউমারে রূপ নেয়। প্রাথমিকপর্যায়ে এই পরিবর্তন চোখে ধরা না পড়লেও সচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা থাকলে সহজেই শনাক্ত করা যায়।’

বিজ্ঞাপন

বিশেষ আলোচক শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিয়াজ মাখদুম বলেন, ‘স্তন ক্যানসার প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি হলো সচেতনতা, সময়মতো পরীক্ষা ও নিজের প্রতি যত্নশীল মনোভাব। প্রতিটি নারী যদি নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হন তাহলে শুধু তিনিই নন, তার পরিবার, সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মও উপকৃত হবে। সময়মতো শনাক্তকরণ, চিকিৎসা গ্রহণ এবং ইতিবাচক মনোভাবই জীবন রক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।’

সেমিনারে অধ্যক্ষ প্রফেসর লায়লা আফরোজা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার এই শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে। সমাজকে ক্যানসারমুক্ত করতে হলে এই সচেতনতা থেকে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

‘আমরা নারী’-এর নির্বাহী সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নারী’র এই উদ্যোগ শুধু একটি সংগঠনের কাজ নয়, বরং একটি অনুপ্রেরণা। আমরা প্রত্যেকে যদি সচেতনতার দূত হয়ে এগিয়ে আসি তাহলে ক্যানসারমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।’

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী এম এম জাহিদুর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘আমরা নারী’ একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সামাজিক সংগঠন, যা নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসুরক্ষা, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নারীর অধিকার, স্বাস্থ্য, নিরাপদ খাদ্য, শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতিটি শিক্ষার্থীকে স্তন ক্যানসার সচেতনতার দূত বা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে গড়ে তোলা- যাতে তারা সমাজে সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দিতে পারে।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রোগী প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত না হওয়ার কারণে মারা যান। দেশের মোট ক্যানসার রোগীর প্রায় এক-ষষ্ঠাংশই স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত। নিয়মিত আত্মপরীক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এই মৃত্যুহার অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

সারাবাংলা/এমএইচ/এইচআই
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর