ঢাকা: দেশে চালের মজুদ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দুবাই ও মিয়ানমার থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানিসহ ১০টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৮১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে ক্রয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বাইরে থাকায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে চলতি অর্থবছরের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-০২-এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে দুবাই ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স ক্রিডেন্ট ওয়ান এফজেসিও’ এ চাল সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৫.৯৯ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ২১৬ কোটি ৯০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।
অপর ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি করা হবে জি-টু-জি-এর আওতায় মিয়ানমার থেকে। ‘মিয়ানমার রাইস ফেডারেশন’ এ চাল সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৭৬.৫০ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ২২৯ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
মরক্কো, রাশিয়া ও সৌদি আরব থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন সার আমদানি
ক্রয় কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় মরক্কো, রাশিয়া ও সৌদি আরব থেকে মোট ১ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে প্রতি মেট্রিক টন ৭৩৫.৩৩ ডলার দরে মরক্কো’র ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৭ম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৬০ কোটি ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৬.২৫ ডলার দরে রাশিয়া’র ‘জেএসসি ফরেন ইকোনমিক কর্পোরেশন (প্রুডিনটর্গ) থেকে ৫ম লটে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এছাড়া প্রতি মেট্রিক টন ৪১৩.৩৩ ডলার দরে সৌদি আরব-এর ‘সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি’ থেকে ৫ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১৫১ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।
এছাড়া বৈঠকে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে বরগুনার একটি সাইটে ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি গোডাউন নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজটি পেয়েছে যৌথভাবে ‘মেসার্স এমবিএল-আরইএল’। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।
মীরসরাইয়ে প্রবেশে এক্সেস রোড নির্মাণ
ক্রয় কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় চট্টগ্রামের ‘মিরসরাই-২ এ ও ২বি ইজেড-এ অ্যাক্সেস রোড নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এ কাজটি পেয়েছে ‘মনিকো লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর জন্য বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক
ক্রয় কমিটির বৈঠকে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন, দাখিল ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্য পুস্তক মুদ্রণ,বাঁধাই ও সরবরাহের তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮১টি পাঠ্য পুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যয় হবে ১৩৭ কোটি ৮৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা। মোট ৯৮টি দরপত্রের বিপরীতে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান এসব বই সরবরাহ করবে।
৭ম শ্রেণীর (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২টি পাঠ্য পুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। মোট ১০০টি দরপত্রের বিপরীতে ৯১টি প্রতিষ্ঠান এসব বই সরবরাহ করবে।
৮ম শ্রেণীর (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮টি পাঠ্য পুস্তক মুদ্রণ,বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যয় হবে ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ১২ হাজার টাকা। মোট ১০০টি দরপত্রের বিপরীতে ৯০টি প্রতিষ্ঠান এসব বই সরবরাহ করবে।