রংপুর: তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রংপুরের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে নগরির জেলা স্কুল সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। আয়োজকরা জানান, উত্তরাঞ্চলের তিস্তাসংশ্লিষ্ট বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাদের এই কর্মসূচি।
আয়োজক ‘রংপুরের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে তারা ৫৭টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য ভাগাভাগির অধিকার দাবি করে স্লোগান তোলেন অংশগ্রহণকারীরা।
‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ’-এর সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান জানান, তিস্তা নদীর পানি সংকট, ভাঙন এবং বন্যার কারণে উত্তরাঞ্চলের কৃষি, জীবিকা ও পরিবেশ বিপর্যস্ত। অবিলম্বে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে রংপুরের মানুষ। এই প্রতিবাদ উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।
বক্তারা বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকারের একটি মেগা প্রকল্প, যা তিস্তা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, তীর সংরক্ষণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিজমি রক্ষায় কাজ করবে। ভারতের সঙ্গে পানি ভাগাভাগির অমীমাংসিত ইস্যুর কারণে এটি দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। গত ৫ অক্টোবর রংপুরে ‘তিস্তা রক্ষা আন্দোলন’-এর আয়োজনে ডিসি অফিস ঘেরাও করে মুখ্য উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
তারা জানান, অগ্রাহায়ণ মাসে নির্বাচনের আগেই প্রকল্প শুরু করতে হবে, না হলে উত্তরাঞ্চলের বৈষম্য আরও গভীর হবে।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা (রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী)-এ ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’-এর আয়োজনে হাজারো মানুষ মশাল মিছিল করে। মিছিলে বিএনপি নেতাকর্মীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, নভেম্বরের মধ্যে মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু না হলে লাগাতার আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনে সম্পৃক্ত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা শুধু পানি চাই না, আমাদের অধিকার চাই। আবু সাঈদের মতো শহীদদের স্মৃতিতে এই আন্দোলন চলবে।’
উল্লেখ্য, এই আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা উত্তরাঞ্চলের জনগণের মধ্যে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।