Friday 29 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সামানের রক্তে ছিল অ্যাডভেঞ্চারের নেশা


১০ জুলাই ২০১৮ ২৩:০৮

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। 

অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া ১২ কিশোর ও তাদের সহকারী কোচকে। তিনদিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে সফলভাবে সম্পন্ন হলেও উদ্ধার অভিযানে প্রাণ হারাতে হয়েছে এক দুঃসাহসী অভিযাত্রীক সামান কুনানকে।

গুহার অন্ধকার থেকে পৃথিবীর আলোয় ১২ কিশোর ও কোচ

৩৮ বছর বয়সী সামান কুনান থাইল্যান্ড নেভিসিল থেকে অবসর নিয়েছিলেন বেশ আগেই। যখন শুনলেন গুহায় আটকে পড়া শিশুদের জন্য সেখানকার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়ংকর হচ্ছে। গুহার ভিতরে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমছে অক্সিজেন। তখন আর স্থির থাকতে পারেননি সামান। যোগ দেন উদ্ধার অভিযানে।

বাবা মায়েদের মুখে হাসি, থাইল্যান্ড জুড়ে আনন্দ

কে জানতো আটকে পড়া কিশোরদের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসার সময় নিজেই মারা যাবেন অক্সিজেন স্বল্পতায়।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে ফেরার পথে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করেছে লাশ হিসেবে। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়। গুহার অন্ধকার পরিবেশ থেকে আলোতে ফিরে আসে কিশোরেরা।

নেভি ডাইভারস, সেনা সদস্য ও সাধারণ স্বেচ্ছাসেবী মিলিয়ে প্রায় হাজারও মানুষ অংশ নেন উদ্ধার অভিযানে।

মৃত্যুর আগে ১১ ঘণ্টার দীর্ঘ এক অভিযানে অংশ নেন সামান। ফিরে আসার সময় অক্সিজের স্বল্পতার কারণে অচেতন হয়ে পড়লে তার সহকর্মীরা তাকে জাগানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়, বলে জানান রাই অঞ্চলের ডেপুটি গভর্নর প্যাসাকর্ন বানিয়ালুক।

সামানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ওয়ালিপর্ন কুনান বিবিসিকে বলেন, ‘প্রতিদিন সে কাজে যাওয়ার আগে আমরা একে অপরকে বলতাম ভালোবাসি। এরপর দুপুরে আমরা একে অপরকে মেসেজ পাঠাতাম লাঞ্চ করেছে কি-না জানার জন্য। সন্ধ্যায় ফিরে আসলে জানতে চাইতাম সে কেমন আছো।’

বিজ্ঞাপন

‘আপনি যদি জানতে চান আমি শোকাহত কি-না। তাহলে বলবো আমি জীবিত থাকলেও আদতে মরে গেছি, বলেন সামানের স্ত্রী।

সামানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে শেষকৃত্যের আয়োজনের নির্দেশ দেন থাইল্যান্ডের রাজা।

অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় কুনানের ফেসবুক পেইজে দেখা গেছে তার শখ ছিলো ট্রেইল রানিং ও সাইক্লিং। এ ছাড়াও দ্য নর্থ ফেস অ্যাডভেঞ্চার টিমের সদস্য হিসেবে অ্যাডভেঞ্চার রেসও সম্পন্ন করেছে কুনান।

প্রায় সব ধরনের অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করতেন সামান। তার ফেসবুকের বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে কখনো সে সাইকেল চালাচ্ছে, কখনো পহাড়ে ট্রাকিং করছে, কখনো বা তীব্র স্রোতের মধ্যে নৌকা বাইচ করছেন। অ্যাডভেঞ্চারই ছিল তার নেশা।

লেফটেন্যান্ট চালোং প্যানপং, তিনি একসময় সামানের প্রশিক্ষক ছিলেন। তিনি জানান, ‘আমি যখন ফোনে খবরটা শুনলাম, স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। সে ছিল একজন পাকা এ্যাথলেট। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য।’

‘সে আমার ছাত্র ছিল। দু বছর নন-কমিশন্ড অফিসারদের ট্রেনিং কলেজে ছিল, তার পর গ্রাজুয়েশন শেষে মেরিন স্কুলে যোগ দেয়। সেখানেই আমার সঙ্গে তার পরিচয় হয়।’

‘তার পই সে শিখলো কিভাবে ডুবুরির কাজ করতে হয়। এর পর সে নৌবাহিনীর বিশেষ বাহিনীতে কাজ করেছিল। তবে তার পর সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আরও কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে এয়ারপোর্টে কাজ করতে শুরু করে।’

 

সারাবাংলা/এমআই

 

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর