ঢাকা: বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর কাছে বিসিএস পরীক্ষার সংস্কার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ১৫ দফা প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে পিএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন এনসিপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন এবং যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া।
বৈঠক শেষে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল বিসিএসের বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে। কিন্তু এখনো পিএসসির কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা রয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সংস্কার না হলে এই প্রজন্মের ক্ষোভ আরও বাড়বে। বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে চাকরিপ্রার্থীদের চেয়ে কর্মকর্তাদের নিজেদের পদোন্নতি ও পোস্টিং নিয়েই বেশি ব্যস্ততা দেখা যায়।’
এনসিপির ১৫ দফা প্রস্তাব—
- ২৩ নন-ক্যাডার বিধি সংশোধন: প্রধান উপদেষ্টার দফতরে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত বাস্তবায়নের সুপারিশ করে পিএসসিকে চিঠি পাঠানোর আহ্বান।
- ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার সুপারিশ দ্রুত সম্পন্ন: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে।
- ৪৪তম বিসিএসের পুনঃফলাফল ও গেজেট: অধিযাচিত ৮৭০টি পদ বৃদ্ধি করে চলতি বছরেই গেজেট প্রকাশের দাবি।
- ২০২৩ সালের নন-ক্যাডার বিধি সংশোধন ত্বরান্বিত: ৪৩ থেকে ৪৭তম বিসিএস পর্যন্ত সর্বাধিক নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
- ৪৩তম বিসিএস হেড টিচার প্রার্থীদের পুনর্বিন্যাস: মেধার ভিত্তিতে নতুন সার্কুলারে অন্তর্ভুক্তির দাবি।
- ৪৫তম বিসিএস ভাইভার হাজিরা পত্রে ১০০ নম্বরের আপডেট নিশ্চিত করা।
- স্বচ্ছতার জন্য প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা সব মার্কস প্রকাশ করা।
- চূড়ান্ত নম্বরপত্র অনলাইনে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে দেখা যাবে এমন ব্যবস্থা করা।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা।
- প্রতি ক্যালেন্ডার ইয়ারে একটি বিসিএস সম্পন্ন করা।
- শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে স্পেশাল বিসিএসে প্যানেল সিস্টেম চালু রাখা।
- ভাইভা বোর্ডে নম্বরের বৈষম্য রোধে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা: যেমন ভাষা, দক্ষতা, বিষয় জ্ঞান, রাষ্ট্রীয় নীতি, মানসিক যোগ্যতা ইত্যাদি।
- প্রিলি থেকে লিখিত পরীক্ষার রুটিন অন্তত ৫০ দিন আগে প্রকাশ করা।
- চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগে ক্রসচেক করে নিচু ক্যাডারে স্থানান্তর রোধ করা।
- পিএসসির অধীনে হওয়া সব পরীক্ষা গ্রেডভিত্তিক বা ক্লাস্টার পদ্ধতিতে নেওয়া।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর আমলারা নিজেদের সুবিধা নিশ্চিত করেছে, কিন্তু পরীক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার চলছে। পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে যুগোপযোগী সংস্কারে যেতে হবে।’