ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দেশপ্রেমিক দলকে নির্বাচিত করতে হবে— যারা পরীক্ষিত, যারা মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়েছিল, যারা স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে, স্বাধীনতার পক্ষে লড়েছে। সেই দল শহীদ জিয়া, বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের দল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সেই দলের প্রতীক—ধানের শীষ। এই প্রতীকের বিকল্প মানুষ আজও দেখে না।
রবিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’-এর উদ্যোগে দেশের সর্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ এখন নানা চক্রান্তের মুখে রয়েছে। আপনারা সবাই জানেন যে, কর্তৃত্ববাদী সেই শাসকগোষ্ঠী, যারা গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল, যারা বাংলাদেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল, তারা জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রায় চৌদ্দ মাস আগে যখন শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে, তখন পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিভিন্ন মহল থেকে ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা বিপন্ন’ বলে এক ধরনের মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে । সেই অপপ্রচার তারা বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে লাগাতার ভাবে চালিয়ে গেছে। কিন্তু এখন আর তারা তা করছে না। কারণ, সারাবিশ্ব জানে—বাংলার মানুষ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলমান— সবাই মিলে হাজার বছরের সংস্কৃতি ধারণ করে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, সকলের রাজনৈতিক অধিকার আছে, আমরা তা অস্বীকার করি না। কিন্তু যারা গণহত্যা করেছে, যারা বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের, এমন কী ছোট ছোট শিশুদের হত্যা করেছে, তাদের আগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তারা আগে সেই টাকা দেশে ফেরত আনুক। তারপরে দেশের জনগণ ভেবে দেখবে- তারা নির্বাচন করতে পারবে কি না।
তিনি বলেন, এই দেশ গণমানুষের দেশ, গরিব মানুষের দেশ, কৃষক-শ্রমিকের দেশ। আগে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে। বর্তমানে এমন কোনো দ্রব্য নেই যার দাম বাড়ে নাই, মানুষের আয় ক্রমশ কমে যাচ্ছে। চাকরির সুযোগ নেই বললেই চলে। তাই আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই—কাজের সংস্থান করুন, না হলে এই দেশকে সঠিকভাবে চালানো কঠিন হবে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, চারদিকে ষড়যন্ত্র চলছে। অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে কিছু ধান্দাবাজও সক্রিয়। তাদের ঠেকাতে হলে একটি যোগ্য, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এর বাইরে আর কোনো পথ নেই। সেই পথে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি— ঐক্যবদ্ধ হোন, দেশ রক্ষার সংগ্রামে অংশ নিন।
‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’-এর সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন-এর সভাপত্বিতে নাগরিক সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, সাবেক এমপি লিংকন, জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকন প্রমুখ।