Sunday 26 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মন্দ শ্রেণির খেলাপি ঋণ অবলোপনে সময়সীমা শিথিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:১০ | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৪৯

ঢাকা: মন্দ শ্রেণির খেলাপি ঋণ অবলোপনে ব্যাংকগুলোর জন্য সময়সীমা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে মন্দ ঋণ অবলোপনের কমপক্ষে ৩০ কর্মদিবস আগে সংশ্লিষ্ট খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করতে হবে।

অতি সম্প্রতি (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ-সংক্রান্ত পূর্বের (১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪) নীতিমালা সংশোধন করে নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে।

পূর্বের নীতিমালা অনুযায়ী, যে সকল ঋণ হিসাব একাদিক্রমে দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত রয়েছে, সে সকল ঋণ হিসাব অবলোপন করা যাবে।

এ বিষয়ে সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত এবং ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এরূপ ঋণ হিসাব অবলোপন করা যাবে। তবে কালানুক্রমিকভাবে অধিকতর পুরোনো মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত ঋণগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবলোপন করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে কোনো ঋণ হিসাব অবলোপনের কমপক্ষে ৩০ কর্মদিবস পূর্বে সংশ্লিষ্ট খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে ঋণ অবলোপনের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে অবহিত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

ঋণ হিসাব অবলোপনে সংশ্লিষ্ট খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে অবহিত করার বিষয়ে সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, ঋণ অবলোপন-পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা তার ঋণের সম্পূর্ণ দায় পরিশোধ না-করা পর্যন্ত যথানিয়মে খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত হবেন- বিধায় অবলোপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে ঋণগ্রহীতাকে অবহিতকরণের আবশ্যকতা রয়েছে।

সংশোধিত নীতিমালায় অবলোপন সংক্রান্ত অন্যান্য ধারা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঋণের শ্রেণিমান যাই হোক না কেন, কোনো মৃত ব্যক্তির নিজ নামে বা তার একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে গৃহীত ঋণ হিসাব ব্যাংক স্বীয় বিবেচনায় অবলোপন করতে পারবে। তবে একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির উপার্জনক্ষম উত্তরসূরি রয়েছে কি না- তা বিবেচনায় নিতে হবে।

এছাড়া ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা প্রদান করা এবং প্রয়োজনে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে প্রণোদনা নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশোধিত নীতিমালায়।

প্রসঙ্গত: বিদ্যমান নিয়মে ঋণ হিসাব অবলোপনে ৫টি পদ্ধতির উল্লেখ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- অবলোপনযোগ্য ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের অনুকূলে বন্ধকিকৃত সম্পত্তি (যদি থাকে) নিয়মানুগভাবে বিক্রয়ের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হলে এবং ব্যাংকে নিশ্চয়তা প্রদানকারী ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গের (গ্যারান্টার) নিকট থেকে পাওনা অর্থ আদায়ে সমর্থ না হলে ওই ঋণ অবলোপনের আওতায় আসবে;

অবলোপনের জন্য নির্বাচিত ঋণ হিসাবগুলোর ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গৃহীত না হয়ে থাকলে অবলোপনের পূর্বে অবশ্যই ‘অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩’ অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে। তবে এ আইনের আওতায় অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মামলাযোগ্য না হলে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ এবং মৃত ব্যক্তির নিজ নামে কিংবা তার একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে গৃহীত যে কোনো অঙ্কের ঋণ মামলা দায়ের ছাড়া অবলোপন করা যাবে;

অবলোপনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবের স্থিতি থেকে শুধুমাত্র রক্ষিত স্থগিত সুদ বাদ দেওয়ার পর অবশিষ্ট ঋণস্থিতির সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। চিহ্নিত প্রতিটি ঋণ হিসাবের বিপরীতে রক্ষিত প্রভিশন পর্যা্ত না হলে ব্যাংকের চলতি বছরের আয় খাত বিকলন করে অবশিষ্ট প্রভিশন সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে;

কোনো ঋণ হিসাব আংশিকভাবে অবলোপন করা যাবে না; এবং

ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া কোনো ঋণ হিসাব অবলোপন করা যাবে না।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর