ঢাকা: দেশের তরুণ প্রজন্মকে উদ্ভাবনী চিন্তা ও আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ করতে পারলেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া যাবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট মানব সম্পদ উন্নয়ন শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় সভাপতি তাসকীন আহমেদ এ কথা বলেন।
ডিসিসিআই-এর সভাপতি তাসকীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব), ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনএসডিএ), বাংলাদেশ সরকার।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ, ভিজিটিং প্রফেসর অব ইকোনমিক্স, রিডিং ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাজ্য); সিনিয়র ফেলো, আইডিইএএস (মালয়েশিয়া); এবং অ্যাডজাঙ্কট প্রফেসর, চুলালংকর্ন ইউনিভার্সিটি (থাইল্যান্ড)। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৯ কোটি ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারে, তবে নতুন প্রযুক্তিনির্ভর খাতে প্রায় ১৭ কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এই পরিবর্তনের জন্য আমাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কাঠামোকে যুগোপযোগী করা জরুরি।’
ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ। দেশের তরুণ প্রজন্মকে যদি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান ও সৃজনশীল চিন্তায় দক্ষ করে তোলা যায়, তাহলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক বাজারে একটি শক্ত অবস্থান নিতে পারবে।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিশ্ব অর্থনীতি ও শ্রমবাজারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস, বিগ ডাটা, ব্লকচেইন এবং ইন্টারনেট অব থিংস এর মতো প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের ধরন পালটে দিচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে হলে স্মার্ট মানবসম্পদ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।
বক্তারা আরও বলেন, এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশকেও মানবসম্পদ উন্নয়নে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনই চার আইআর সংশ্লিষ্ট দক্ষতা যেমন—জিআইএস (ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা), বিপিও (ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া আউটসোর্সিং), মাল্টিমিডিয়া, এআই, আইওটি, রোবোটিক্স ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে (টিভিইটি) আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হলে শিল্পখাতের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তারা মত দেন।
বক্তারা আরও বলেন, মানবসম্পদের কার্যকর উন্নয়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান বক্তারা।