Monday 27 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিগগিরই ‘সবুজ সংকেত’
সিলেটের ১৯ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ৮০ জন

মো. মহসিন হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৪৬ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:২৬

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। ফাইল ছবি

ঢাকা: সরকার ঘোষিত সময়সীমা অনুযায়ী আসছে ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে আসনভিত্তিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছে। সেখানে ভোটারদের মন জয়ের পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ থেকে দল মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আর ত্যাগী নেতা যারা মনোনয়ন পাবেন না, তাদের অন্য কোনো জায়গায় মূল্যায়ন করা হবে বলেও আশ্বস্ত করা হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ অক্টোবর সিলেট বিভাগের চার জেলার ১৯টি সংসদীয় আসনে দলের প্রায় ৮০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে গুলশান কার্যালয়ে ডাকা হয়। তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (২৭ অক্টোবর) ফের সব প্রার্থীকে গুলশান কার্যালয়ে ডাকা হয়। তাদের উদ্দেশে কথা বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিজ্ঞাপন

১৯ অক্টোবরের বৈঠকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড মহাসচিবের কাছে উপস্থাপন করেন। এ সময় মহাসচিব সবার বক্তব্য মন দিয়ে শোনেন। তবে দেশের বাইরে থাকায় মহাসচিবের বৈঠকে ডাক পাওয়ার পরও সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির এবং সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নাছির উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত থাকতে পারেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের ছয় জেলায় রয়েছে ১৯টি আসন। এর মধ্যে সিলেট-১ (মহানগর-সদর) হেভিওয়েটদের আসন হিসেবে বিবেচিত। হযরত শাহজালালের পুণ্যভূমির এই আসনে সবসময় হেভিওয়েট প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন।

এছাড়া, জেলার ছয় আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। গতবছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর পরই বিএনপির মনোনয়ন পেতে আগ্রহীরা তৎপরতা শুরু করেন। তারা লন্ডন-ঢাকায় যোগাযোগ রাখছেন। সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের পাঁচ উপদেষ্টা এবং তারেক রহমানের দুই উপদেষ্টাসহ দলীয় ২৬ জন মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। যদিও এখন পর্যন্ত দলটির পক্ষ থেকে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি।

সিলেট-১ (মহানগরী ও সদর উত্তর)

প্রচলিত আছে, সিলেট-১ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন, সে দলই সরকার গঠন করে। কাকতালীয়ভাবে এ ধারাই চলে আসছে। এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বিএনপি চেয়ারপারসনের দুই উপদেষ্টা সরাসরি লড়াইয়ে নেমেছেন। তাদের একজন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। অন্যজন সিলেট সিটি করপোরেশনে দু’বারের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া জিয়া পরিবারের, বিশেষ করে সিলেটের কৃতিসন্তান বেগম খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানকে প্রার্থী করার জন্য একটি মহল চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। সূত্র জানিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার স্ত্রীকে আপাতত রাজনীতির মাঠে নামাতে চান না।

সিলেট-১ আসনে আরও যারা মনোনয়নপ্রত্যাশী তারা হলেন- দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা লন্ডনপ্রবাসী ব্যারিস্টার এমএ সালাম, যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হেমলেটের সাবেক কাউন্সিলর অহিদ আহমদ ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে যুক্তরাজ্যের কাউন্সিলর পপি খান।

সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর)

সিলেট-২ (ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ)। এই আসনে সাবেক এমপি ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা এম ইলিয়াস আলী। তিনি গুমের শিকার হওয়ার পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার সহধর্মিণী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ডেপুটি রেজিস্ট্রার তাহসিনা রুশদীর লুনাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে তিনি নির্বাচন করতে পারেননি। পরে বিএনপি এই আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামকে ছেড়ে দেয়। বিএনপির সমর্থনে গণফোরামের মোকাব্বির হোসেন খান এ আসনে বিজয়ী হন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবাসী অধ্যুষিত আসনটিতে বিএনপির নেত্রী হিসেবে একক আধিপত্য তাহসিনা রুশদীর লুনার। এতদিন থেকে তিনি ছিলেন এই আসনে একক মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে সম্প্রতি তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা লন্ডনপ্রবাসী হুমায়ুন কবিরের নামও তার অনুসারীদের মধ্যে আলোচিত হচ্ছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই আসনটি ইলিয়াসপত্নী লুনাকে দিতে যাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এ লক্ষ্যে লুনা মাঠে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ)

সিলেট-৩ আসনে এবার বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এমএ সালাম, সিলেট মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম হক আদনান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল।

সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ)

পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর নিয়ে সিলেট-৪ আসন। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মিফতাহ্ সিদ্দিকী, মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও গোয়াইনঘাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী।

এ আসনে আরও মনোনয়ন চান দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। ২০২১ সালে স্বেচ্ছাসেবক দলের সিলেট জেলা ও নগর কমিটি গঠনকে কেন্দ্র স্বেচ্ছায় কেন্দ্রীয় কমিটির পদ ছেড়ে দেন জামান। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি দল থেকে পদত্যাগ করিনি। কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক পদ থেকে সরে গিয়েছিলাম। আমি তখনও বলেছি এখনও বলছি আমি বিএনপির লোক বিএনপিতেই আছি। গত ১৯ অক্টোবর দলীয় মহাসচিব গুলশান কার্যালয়ে সিলেট বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে যে বৈঠক করেছিলেন সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘২৭ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিলেট বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গুলশান কার্যালয়ে ডেকেছেন। কিন্তু আমাকে দলের দায়িত্বশীল একজন এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় একটি মেসেজ পাঠিয়েছেন যে, বিকেল ৪টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে উপস্থিত হতে হবে। আমি সিলেটে অবস্থান করছি। এই সময়ের মধ্যে সেখানে পৌঁছা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এটা তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করেছেন। শুনেছি অনেককে দু’দিন আগেও জানানো হয়েছে। অথচ আমাকে জানানো হয়েছে কয়েক ঘণ্টা আগে।’

সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট)

জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট নিয়ে গঠিত সিলেট-৫ আসন থেকে ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব মরহুম হারিছ চৌধুরী নির্বাচন করেছিলেন। এর পর থেকে জোটের প্রার্থীদেরই ছেড়ে দেওয়া হয় আসনটি। এবার বিএনপি প্রার্থীরা আর ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের পক্ষে তারা একজোট হয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন চেয়ে বিএনপির অন্তত চার নেতা তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন), জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরী ও হারিছ চৌধুরীর কন্যা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী।

সামিরা তানজিন সারাবাংলাকে জানান, তিনি তার বাবার রেখে যাওয়া সমাজকল্যাণমূলক কাজ করছেন। তার বাবার নামে হারিছ চৌধুরী ফাউন্ডেশন করেছেন। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এলাকার মানুষকে সহায়তা করেন। ১৯ অক্টোবর গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বৈঠকে গিয়েছিলেন কী না? ‘দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে যারা আছেন তারা প্রথমে আমাকে ডেকে পরে জানিয়েছেন, আমি তাদের তালিকায় নেই। তাই আমি যাইনি।’ আপনি মনোনয়ন প্রত্যাশী কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে সামিরা চৌধুরী বলেন, ‘এটা আব্বুর আসন, মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নের মূল ভাগিদার বিএনপি। উন্নয়ন যা হয়েছে আমার আব্বুর হাত ধরে। তাই জনগণের প্রত্যাশা আমি যেন নির্বাচন করি। আমি নিজে এখনো কিছু ঠিক করিনি। তৃণমূলে জনকল্যাণমূলক কাজ করছি, বাকিটা দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত। তারা যদি নির্দেশ দেন তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব।’

সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ)

বিপুলসংখ্যক প্রবাসী অধ্যুষিত গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার হেভিওয়েটসহ সবচেয়ে বেশি ব্যক্তি বিএনপির মনোনয়নের লড়াইয়ে রয়েছেন। দেশি ও প্রবাসী বিএনপির বিভিন্ন পদধারী অন্তত ৯ জন মনোনয়নের জন্য উচ্চপর্যায়ে লবিং শুরু করেছেন। আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন ২০১৮ সালে দলের মনোনীত প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম।

এ ছাড়াও রয়েছেন যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হেমলেটের সাবেক কাউন্সিলর অহিদ আহমদ, জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠজন মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে যুক্তরাজ্যের কাউন্সিলর পপি খান এবং সাবেক এমপি ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার মেয়ে সৈয়দা আদিবা হোসেন।

আদিবা হোসেন এলাকায় এসে তার বাবার অনুসারী, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করে নিজের প্রার্থিতার জানান দিয়েছেন অনেক আগেই। এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

সৈয়দা আদিবা হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ১৯ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক করেছেন সেখানে আমি ছিলাম। আজকেও (২৭ অক্টোবর) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের ডেকেছিলেন। সেখানেও উপস্থিত ছিলাম।’

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী তৃণমুলে কাজ করছি। আমার পিতা এই আসনে দু’বার এমপি ছিলেন। তৃণমূলে তার যোগাযোগ ছিল। তিনি তার সময়ে এলাকায় বহু স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা করেছেন। রাস্তা-ঘাট, সেতু করেছেন। তার রেখে যাওয়া কাজ করতে চাই। দল যদি সুযোগ দেয় তাহলে নির্বাচনে অংশ নেব। আশা করি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। আর মনোনয়ন পেলে আসনটি বিএনপিকে উপহার দিতে পারব।’

দলীয় সূত্র জানায়, একাধিক জরিপের মাধ্যমে দল সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীকেই বাছাই করবে। সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য নেতাকেই দল মনোনয়ন দেবে। কেউ যদি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকলের প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটাই বার্তা দিচ্ছেন, সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে তিনি ১৯ অক্টোবরের বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন। মহাসচিব সব মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ধানের শীষের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। যথাসময়ে দল যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে বলে মহাসচিব জানিয়েছেন।’

নিজের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি জেলা বিএনপির সভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে দলে আছি। আন্দোলন সংগ্রাম, করোনা মহামারি থেকে শুরু করে সবসময় মাঠে ছিলাম। আশা করি, দলের হাইকমাণ্ড বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’

সিলেট-৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুজ্জামান জামানকে বিকেলের বৈঠকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে সকাল সাড়ে ১০টায়। এ বিষয়ে কাইয়ুম চৌধুরী সারাবাংলার এই প্রতিবেদকে বলেন, ‘এটা আমার জানা নেই। যাদের ডাকা হয়েছে সবাইকে কেন্দ্র থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এবার বরাবরের মতো প্রার্থীর সাক্ষাৎকার বা তদবির নয়, নিজস্ব আমলনামার তথ্য ও ডিজিটাল পর্যবেক্ষণে প্রাপ্ত তথ্যই মনোনয়নে প্রাধান্য পাবে। বিএনপির এই ডাটাবেজে মূলত পাঁচটি যোগ্যতা ও পাঁচটি অযোগ্যতার অপশন রাখা হয়েছে। ওই ঘরগুলো পূরণ করলে ডাটাবেজসংশ্লিষ্ট প্রার্থীর জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় র‌্যাংকিং দেবে। তা সরবরাহ করা হবে মনোনয়ন নির্ধারণ কমিটিকে। কিছু বিশেষ কারণ ছাড়া এই র‌্যাংকিংকেই প্রধান্য দেওয়া হবে।’

এদিকে চলতি মাসেই অন্তত ২৫০ আসনে একক প্রার্থীকে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। তফসিলের পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নাম ঘোষণা করা হবে। নানা দিক বিবেচনায় এবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সারাবাংলা/এমএমএইচ/পিটিএম
বিজ্ঞাপন

বগুড়ায় যুবককে কুপিয়ে খুন
২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২২:৪৮

আরো

সম্পর্কিত খবর