চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় যুবদলের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। নিহত যুবক ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাত পৌনে ১টার দিকে নগরীর বাকলিয়া থানার সৈয়দ শাহ রোডের মদিনা আবাসিকের সামনে এক্সেস রোডে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ সূত্র ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের দুই নেতা এমদাদুল হক বাদশা ও বোরহানের গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে এ সংঘাত হয়েছে। যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে টানানো ব্যানার খুলে ফেলা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হয়।
এদের মধ্যে এমদাদুল হক বাদশা চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগে গত জুলাইয়ে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
সংঘর্ষে নিহত মো. সাজ্জাদ (২২) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। নগরীর বাকলিয়ার তক্তারপুল এলাকার বাসিন্দা মো. আলমের ছেলে। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায়।
সাজ্জাদের বড় ভাই মো. ইমরান সারাবাংলাকে জানান, তাদের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং মেয়র শাহাদাতের সমর্থক। সাজ্জাদের পদ-পদবি না থাকলেও ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। নগরীর পাথরঘাটার একটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাকলিয়া এলাকার ‘যুবদল নেতা’ বোরহান সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মেয়র শাহাদাতের ছবিসহ একটি ব্যানার টানান সৈয়দ শাহ রোডে। রাতে বাদশা গ্রুপের নেতাকর্মীরা গিয়ে মেয়রের নির্দেশের কথা বলে সেটি নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এসময় বোরহান ও তার লোকজন মিলে তাদের বাধা দেয়।
এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বাদশা গ্রুপের কর্মীরা ব্যানারটি ছিঁড়ে ফেলেন। এতে উভয় গ্রুপে মারামারি ও গোলাগুলি শুরু হয়। এতে সাজ্জাদসহ আট থেকে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ জানায়, আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়৷ জরুরি বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক সাজ্জাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহত আটজনকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরা হলেন- জুয়েল, সাব্বির, শরীফ, ইয়াসিন, একরাম, পারভেজ ও মারুফ। তাদের বাসা বাকলিয়ার বৌবাজার এলাকায়।
নিহত সাজ্জাদের ভাই ইমরান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার ভাই বাসায় ছিল। মোবারক নামে একজন তাকে কল করে ডেকে নিয়ে যায়। মোবারক বিএনপি করে। বাসা সৈয়দ শাহ রোডে৷ সাজ্জাদ বাসা থেকে বের হবার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়।’
‘সৈয়দ শাহ রোডের মুখ থেকে একেবারে শান্তিনগরের মুখ পর্যন্ত ব্লক করে তারপর গোলাগুলি করা হয়। রাত ২টার দিকে শুনতে পাই, আমার ভাই মেডিকেলে মারা গেছে। শুনেছি, মেয়র সাহেবের নামে ব্যানার লাগানো নিয়ে ঝামেলা হয়েছে।’
জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যানার লাগানো নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’