Tuesday 28 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাবিতে ৭ম গ্রেডে প্রভাষক নিয়োগসহ একাধিক প্রস্তাব

ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট
২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:৪৬ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ২১:৫৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: মূল্যস্ফীতি ও আগের পে স্কেল বিবেচনায় মূল প্রস্তাবিত নবম জাতীয় পে স্কেলে মূল বেতন ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি ও নবম গ্রেডের পরিবর্তে সপ্তম গ্রেডে প্রভাষক নিয়োগসহ একাধিক প্রস্তাব করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে বেতন প্রস্তাবনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নবম পে কমিশনের নিকট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো- ন্যূনতম দুই লাখ টাকা গবেষণা অনুদান, এক হাজার কোটি টাকার গবেষণা অনুদান ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য এক হাজার কোটি টাকা অ্যানডোমেন্ট ফান্ড গঠন।

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাব অনুযায়ী, ১ম গ্রেডের সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ২য় গ্রেডের বেতন ১ লাখ ৮৮ হাজার থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার ৬৭০ টাকার মধ্যে রাখা হয়েছে। ৩য় গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। ৪র্থ গ্রেডের কর্মচারীরা পাবেন ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭১ হাজার ৩০০ টাকার বেতন। ৫ম গ্রেডে এই পরিমাণ হবে ১ লাখ ২৯ হাজার থেকে ২ লাখ ১১০ টাকা।

এ ছাড়া ৭ম গ্রেডে কর্মরতদের বেতন ৮৭ হাজার থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩০ টাকার মধ্যে নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সর্বনিম্ন অর্থাৎ ২০তম গ্রেডে বেতন ধরা হয়েছে ২৫ হাজার থেকে ৬৮ হাজার ৯৭৫ টাকা পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বেতন ও গ্রেড প্রস্তাব করা হয়েছে- প্রভাষক ৭ম গ্রেড, সহকারী অধ্যাপক ৫ম গ্রেড, সহযোগী অধ্যাপক ৩য় গ্রেড, অধ্যাপক ২য় গ্রেড, মোট অধ্যাপকের ২৫ শতাংশ ১ম গ্রেড পাবেন।

প্রস্তাব অনুযায়ী, বিশেষভাবে ১ম গ্রেডের অধ্যাপকের মধ্যে ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ২০ জন ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক হয়ে বাড়তি বেতন এবং গৃহ ও গবেষণা সহকারী পাবেন; তিনজন ‘বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক’ পদ পাবেন, তারা সার্বক্ষণিক গাড়ি, গৃহ ও গবেষণা সহকারী সুবিধা পাবেন। এগুলো গবেষণা, প্রকাশনার ভিত্তিতে দেওয়া হবে।

কোষাধ্যক্ষ এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক পরিবেশ যখন আরও উন্নত হবে, তখন আমাদের ভালো শিক্ষক রাখা কঠিন হবে। তারা আমাদের তিন থেকে পাঁচ গুণ বেতন অফার করছে।’

এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পরিসর বৃদ্ধিতে অধ্যাপক ১০ লাখ টাকা, সহযোগী অধ্যাপক পাঁচ লাখ টাকা, সহকারী অধ্যাপক তিন লাখ টাকা এবং প্রভাষককে দুই লাখ টাকা বাৎসরিক গবেষণা অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

গবেষণা কিউ১, কিউ২, কিউ৩ পর্যন্ত জার্নালে প্রকাশে এক লাখ টাকা, ৭৫ হাজার টাকা, ২৫ হাজার টাকা প্রণোদনা দেওয়া; বিদেশে সভা, সেমিনারে অংশগ্রহণ বাবদ প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব হয়েছে।

কোষাধ্যক্ষ বলেন, ‘আমরা ওই প্রস্তাব করেছি, এসব টাকা শুধু গবেষণা বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হবে। কেউ ব্যক্তিগত ব্যয়ে এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন না। গবেষণা না করলে টাকা ফেরত নেওয়া হবে।’

মূল বেতনের সমপরিমাণ ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার ভাতা; ২৫ শতাংশ ডিন, প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটর (বর্তমানে ১৫০০ টাকা পান) ভাতা, ২০ শতাংশ চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও গবেষণা সেন্টারের পরিচালক ভাতা, ৫০ শতাংশ প্রক্টর ভাতা; অফিস প্রধানদের ২৫০০ টাকা বিদ্যুৎ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে কমিটি।

ভাতার মধ্যে উৎসব ভাতা মূল বেতনের ২০০ শতাংশ হারে বছরে দুইটি, ৫০ শতাংশ নববর্ষ ভাতা, ২০ শতাংশ হারে ঢাকা সিটি ভাতা, ১০ শতাংশ শিক্ষা উপকরণ ভাতা; ছয় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা, সন্তান প্রতি মাসিক দুই হাজার টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতা, শিক্ষকদের বই ভাতা ২০ হাজার টাকা, নবম গ্রেড পর্যন্ত টেলিফোন ভাতা, কর্মকর্তাদের ৩য় গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতি প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ বলেন, ‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো প্রমিনেন্ট হয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্ব এআইয়ের দিকে ঝুঁকছে। আমাদের যদি প্রতিযোগিতায় থাকতে হয়, তাহলে উচ্চ শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ভারত ও পাকিস্তানে কলেজের শিক্ষক বছরে দুইবার ফুল কনফারেন্স ফান্ডিং পান। আমরা সেটি করতে পারিনি। দক্ষিণ এশিয়ায় সাইটেশনযোগ্য অ্যাকাডেমিক আর্টিকেল প্রকাশে বাংলাদেশ সবচেয়ে পিছিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘উন্নত সব ইউনিভার্সিটির অ্যানডোমেন্ট ফান্ড রয়েছে, আমাদের নেই। সরকার আজকে টাকা দেওয়া বন্ধ করলে ইউনিভার্সিটি চালানো যাবে না। যতদিন ফাইনান্সিয়াল ফ্রিডম অর্জিত না হবে, ততদিন প্রকৃত স্বায়ত্ত্বশাসন অর্জিত হবে না।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের শহীদুল জাহিদ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মনিনুর রশিদ, সদস্যসচিব বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শাফী মুস্তফা।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর