ঢাকা: দুই লাখ মেট্রিক টন কৃষি ও রাসায়নিক সার আমদানিসহ ১২টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’। এতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ১৩৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
এর বাইরে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় ‘ডিজেস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (কম্পোনেস্ট ২-৩) বিডি-পি৯১’ শীর্ষক প্রকল্পের পরামর্শক সেবা বাবদ ১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানোর একটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে দেশের বাইরে থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে কৃষি ও রাসায়নিক সার আমদানির ৬টি পৃথক প্রস্তাবে মোট ২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা।
সার আমদানির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে- প্রতি মেট্রিক টন ৩৯২.৩৩ ডলার দরে সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর ‘ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড’ থেকে ১ম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৯২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
একই দরে ও সমপরিমাণ অর্থ ব্যয়ে সৌদি আরব-এর ‘সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি’ থেকে ৬ষ্ঠ লটে আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে।
এছাড়া প্রতি মেট্রিক টন ৩৮০ ডলার দরে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড’ থেকে ৭ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
এছাড়া ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানির জন্য প্রতি মেট্রিক টন ৭৭৫ ডলার দরে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৯৯ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার তৈরি এ এসিড সরবরাহ করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সান জেড ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই’।
অন্যদিকে কৃষি সারের তিন প্রস্তাবের মধ্যে- প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৬.২৫ ডলার দরে রাশিয়ার ‘জেএসসি ফরেন ইকোনমিক কর্পোরেশন (প্রুডিনটর্গ)’ থেকে ৬ষ্ঠ লটে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
অপর দুটি প্রস্তাবে প্রতি মেট্রিক টন ৫৪৮ ডলার দরে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৯ম ও ১০ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন করে মোট ৬০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট ব্যয় হবে ৪০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা (প্রতি লট ২০১ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা)।
৪৫৯ কোটি টাকার বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয়
বৈঠকে ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধনে (বিশেষ সংশোধিত) ৪৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি (এসপিসি পোল) ক্রয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ২২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয়ে লট-৩-এর বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরবরাহ করবে যৌথভাবে- কনফিডেন্স ইন্সফ্রাস্ট্রাকচার, ক্যাসেল কন্সট্রাকশন কো. লিমিটেড, পোলস অ্যান্ড কনক্রীট লিমিটেড ও রয়্যাল গ্রীন প্রোডাক্টস লিমিটেড।
অপরদিকে ২২৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৫ হাজার টাক ব্যয়ে লট-৪-এর বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো এককভাবে সরবরাহ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত ‘বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড’।
আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়নে দুই প্যাকেজের পূর্ত কাজে ব্যয় ৩৭২ কোটি টাকা
বৈঠকে একই প্রকল্পের আওতায় চার লেনের আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়নে ৩৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি পৃথক প্যাকেজের পূর্ত কাজ সম্পাদনে ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ‘কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ (আর-১৪০) (লক্ষ্মীপুর আন্তঃজেলা বাসট্যান্ড থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা) এবং বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী-রামগঞ্জ (আর-১৪২) (সোনাইমুড়ী থেকে রামগঞ্জ) আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেন উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্যাকেজ-০৬- পূর্ত কাজ সম্পাদনে ব্যয় হবে ১৮১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
একই প্রকল্পের প্যাকেজ-০৭-এর পূর্ত কাজ সম্পাদনে ব্যয় হবে ১৯১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। দুটি প্যাকেজের কাজই পেয়েছে ‘মীর হাবিবুল আলম’ নামক একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
অন্যান্যের মধ্যে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রকিউরমেন্ট অব কনসালটেন্সী সার্ভিস ফর প্রভিশন অব পিপিপি ট্রানজিকশন এডভাইজরি সার্ভিসেস ফর ‘বে টার্মিনাল প্রজেক্ট আন্ডার সিপিএ’ (প্যাকেজ নং-এসআর-৩)-এর জন্য ২৫ কোটি ৫০ লাখ ব্যয়ে একজন পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যানিলিটেশন কোম্পানি’।