ঢাকা: ব্যাংক খাতে সম্প্রতি আমানত বাড়লেও সুদের হার এখনো উচ্চ। এ হার কিছুটা না কমালে বিনিয়োগ বাড়বে না। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে সংকোচনমূলক নীতি আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখতে হবে।
বুধবার(২৯ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত মাসিক ‘সামষ্টিক অর্থনীতি বিশ্লেষণ’ সেমিনারে এসব কথা বলেন দেশের অর্থনীতিবিদেরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) -এর সদস্য মনজুর হোসেন। সভাপতিত্ব করেন পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার। অনুষ্ঠানে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিনিয়োগ কিছুটা কম হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে। তবে এটাকে ধস বলা যাবে না। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের কম হবে। তবে প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি ১৭ মাস পর দুই অঙ্কের ঘরে উঠেছে। তবে জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ মাত্র ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিইডি সদস্য মনজুর হোসেন বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে উচ্চ সুদের হার কতটা ভূমিকা রাখছে, সেটা নিয়ে পর্যালোচনা হওয়া দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে কিছুটা ছাড় দেওয়া না হলে বিনিয়োগ বাড়বে না। পর্যালোচনা করা না হলে বোঝা যাবে না, এভাবে আর কত দিন চালিয়ে নেওয়া যাবে। নয়তো মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে। কিন্তু ততদিন কি আমাদের অর্থনীতি এ চাপ বহন করতে পারবে?
পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অনেকটা কষ্টদায়ক। মূল্যস্ফীতির ব্যথা অনুভব করতে হয়। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমালে তা দরিদ্র মানুষের উপকার হয়। দেশে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সুদের হার বাড়ায় ব্যবসায় ধস নেমেছে। সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলা হয়, কিন্তু এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। সুদহার বাড়িয়ে সরবরাহ বাড়ানো কীভাবে সম্ভব?
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ, মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তানজিমা মোস্তফা, পিআরআই’র গবেষণা পরিচালক বজলুল হক খন্দকার প্রমুখ।