Wednesday 29 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাটি-ফসলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব সারে ভর্তুকি ও প্রণোদনা চান বিশেষজ্ঞরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৯ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:৪৫

‘মাটি ও ফসলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব সারে ভর্তুকি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা

ঢাকা: মাটি ও ফসলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব সার ব্যবহারে ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন কৃষি বিশেষজ্ঞ ও নীতি-নির্ধারকেরা। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে একশনএইড বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) যৌথ আয়োজনে ও আরও ২৯টি সহ-আয়োজক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ‘মাটি ও ফসলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব সারে ভর্তুকি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ দাবি জানান।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘আমরা জৈব সার নিয়ে নতুনভাবে ভাবছি এবং সমন্বিত পদ্ধতিতে কীভাবে বিনিয়োগ করা যায়, তার একটি রোডম্যাপ তৈরির কাজ চলছে।’

বিজ্ঞাপন

খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বাস্তব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘২০৫০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চলছে, যেখানে মন্ত্রণালয়সহ সব অংশীজন বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’

সচিব জানান, বর্তমানে মোট কৃষি বাজেটের ৭০ শতাংশ ভর্তুকি খাতে ব্যবহৃত হয়, যার প্রায় ৮০ শতাংশই রাসায়নিক সারের জন্য ব্যয় করা হয়। সরকার রাসায়নিক সারের ব্যবহার ৩২-৩৫ শতাংশ হ্রাস এবং জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। তবে অপব্যবহার রোধ ও ভারসাম্য বজায় রাখতে নিবন্ধন ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা শক্তিশালী রাখা হবে।

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ ও চ্যালেঞ্জ আলোচনায় প্রতি টন জৈব সারের জন্য ৫ হাজার টাকা প্রণোদনা, বিনিয়োগ বা ভর্তুকি দেওয়ার সুপারিশ করেন বারির সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ড. নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জৈব সারের চাহিদা ৬০-৬৫ লাখ টন। এই সার উৎপাদনের জন্য দেশে ৭৫ শতাংশের বেশি কাঁচামাল রয়েছে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে শতভাগ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।’

বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই)-এর মহাপরিচালক ড. সামিয়া সুলাতানা গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব সারের কোনো বিকল্প নেই। মাটি ও কৃষিকে বাঁচাতে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহারে অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।’

বক্তারা কৃষিতে যুব ও নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জৈব উপকরণভিত্তিক উদ্যোগগুলোকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তারা কৃষিবান্ধব পরিবেশ চর্চায় গবেষণা ও উদ্ভাবন জোরদার করা, সচেতনতা ও সম্প্রসারণ সেবা বাড়ানো এবং সরকারি, বেসরকারি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দৃঢ় সমন্বয় তৈরির ওপর জোর দেন।

একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আয়োজনে আরও বক্তব্য দেন বারি’র সাকে মহাপরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম, বি-সেইফ ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক রানা, সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেস এর প্রধান বিজ্ঞানী ড. লতিফুল বারী প্রমুখ।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর