কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীকে শাসানোর পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীর পোশাক নিয়ে আপত্তিকর বা বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে তারা এ মানববন্ধন করে। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দীন মিঝি। তবে এ ঘটনায় তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় এমন জায়গা যেখানে পড়াশোনা হবে, খেলাধুলা হবে, সংস্কৃতির চর্চা হবে। একইভাবে কে কোন পোশাক পরবে সেটাও তাদের নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু শিক্ষার্থীর পোশাকের ব্যাপারে এভাবে কথা বলা কোনোভাবেই খাটে না। আমরা বলতে চাই আমার বোনকে নিয়ে যে স্যার কটূক্তি করেছে তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’
তারা আরও বলেন, ‘এই ধরনের কথা আগেও অনেকেই বলেছে। কিন্তু তাদের পরিনতিও আমরা দেখেছি। এবারও শেষ দেখে ছাড়ব।’
এ সময় তারা আরও বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই আপনারা তালবাহানা বাদ দেন। অতিদ্রুত সাজিদের খুনিদের খুজে বের করেন। নতুবা আপনারা গদিতে টিকতে পারবেন না।’
মানববন্ধনে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম পুষ্প বলেন, আপনি বলেছেন যে আমার হাতে কেনো মাইক দেওয়া হলো? আপনি এই প্রশ্ন না করে বরং উত্তর দিন যে কেনো আমার হাতে মাইক তুলে নেওয়া লাগল। আপনারা কেনো হত্যার বিচার করতে পারছেন না? কেনো ১০৪তম দিনেও আমাদের এখানে কথা বলা লাগতেছে? আমার ভাই মারা যায়নি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কীভাবে আপনি ন্যাংটো মেয়ে বলেন? আপনার লজ্জা করে না? আমার কি পোশাকের স্বাধীনতা নেই। ২৪ এর আন্দোলনের প্রথমে তো আপনারা ঘরে পালায় থাকতেন, এই মেয়েগুলোয় আন্দোলনে আসত। আপনারা তো আসছেন শেষের দিকে। কীভাবে এই মেয়েদেরই কটূক্তি করেন? প্রশাসনকে অবশ্যই এ শিক্ষকের বিচার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে দফায় দফায় আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। তবে সম্প্রতি আন্দোলন ও নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঐ শিক্ষকের বিরূপ মন্তব্যের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।