Thursday 30 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশে গাফিলতি
সায়মার মৃত্যুর ঘটনায় রাবিতে বিক্ষোভ

রাবি করেসপন্ডেন্ট
৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৪৬ | আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:২১

রাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সারাবাংলা

রাবি: সুইমিংপুলে ডুবে মৃত্যুবরণ করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা. সায়মা হোসেনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা প্রকাশিত হয়নি।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসময় ‘তুমি কে আমি কে, সাইমা সাইমা’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাইমা হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার বোন মরলো কেনো প্রশাসন জবাব দে’, ‘প্রশাসনের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘কথা ছিলো তিন দিন, বিচার পাবো কোনদিন‘-সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীরা বলছেন, সায়মার মৃত্যু কি স্বাভাবিক না কোনো গাফিলতির কারণে হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে তারা প্রশাসন কতৃক গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের সময় দিয়েছিল। কিন্তু তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসন নিশ্চুপ হয়ে আছে। জুলাই আন্দোলনের ফলে যারা প্রশাসনের চেয়ারে বসেছে তারা কি আদৌও শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো প্রশাসন? যতোক্ষণ পর্যন্ত সুষ্ঠু কোনো রিপোর্ট প্রকাশ না করা হবে ততোক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এবিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘আজকে আমাদের সায়মা আপুর হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন এখনো তা দেয়নি। এজন্য আজ আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে একত্রিত হয়েছি। প্রশাসন আমাদের ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো প্রতিবেদন পাইনি। আমরা এখানে সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদনের দাবিতে একত্র হয়েছি, এবং এটি আদায় করেই আমরা এখান থেকে যাব ইনশাআল্লাহ’।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসন সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তারা এই জায়গায় কেন গাফিলতি করলো? আরেকটা বিষয় হলো, তারা যেহেতু তদন্ত প্রতিবেদন দেবে, সেহেতু যেন সঠিক প্রতিবেদন দেয়—এখানে যেন কোনো খামখেয়ালি না থাকে। এমনটা যেন না হয় যে, যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই, যারা সায়মা হত্যার সময় উপস্থিত ছিল এবং দায়িত্বে অবহেলা করে সায়মাকে রেসকিউ করতে পারেনি, তাদের যেন চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও, সায়মার পরিবারকে যেন এককালীন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং তার ভাইকে যেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।’

রাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘রাকসু প্রতিনিধিদের অবস্থান এই বিষয়ে সম্পূর্ণ স্পষ্ট। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, তদন্ত কমিটি এবং প্রশাসনের সঙ্গে আমরা রাকসু প্রতিনিধিরা একসঙ্গে সিনেটে বসবো। তারা আমাদের কাছে কিছু সময় চেয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সিনেটে তদন্ত রিপোর্ট সবার সামনে প্রকাশ করা হবে। আমরা তাদেরকে সে পর্যন্ত সময় দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাকসুর প্রতিনিধিরা এখনো পর্যন্ত ভবনে বসেননি এবং প্রথম অধিবেশনও শুরু হয়নি। তবে অধিবেশন শুরু হলেই রাকসুর প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দুই মিনিটও সময় নেবেন না।’

প্রসঙ্গত, নিহত শিক্ষার্থীর সায়মা হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। গত রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে নামলে তিনি পানিতে ডুবে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিবাদে ওই দিন রাতেই ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা এবং সায়মার মৃত্যুর তদন্ত করতে ৭২ ঘন্টার সময় দিয়েছিল তারা।

সারাবাংলা/এনএনই/জিজি