ফরিদপুর: ফরিদপুরে দুটি পৃথক ধারায় শ্যালিকাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুলাভাইসহ চারজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড ও দুইজনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামীকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশও দেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক শামীমা পারভীন এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশ পাহারায় তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো-জাহাঙ্গীর বেপারী, কামরুল মৃধা, আলী বেপারী, বক্কার ব্যাপারী। এছাড়া পাঁচ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো-আবুল কালাম বেপারী ও মমতাজ বেগম। আসামিদের সবার বাড়ি ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকায়।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলা সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে গত ২০১২ সালের পহেলা অক্টোবর গভীর রাতে নিহতের দুলাভাই জাহাঙ্গীর শুশুর বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রী অসুস্থের কথা বলে শ্যালিকাকে ঘরের দরজা খুলতে বলে। এসময় আসামিরা ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ওই নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় নিহতের মা জেলেখা বেগম খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি এসে প্রাথমিক অবস্থায় মৃত্যুর কারণ বুঝতে না পারায় মেয়ের লাশ দাফন করে ফেলেন। পরে ঘটনা জানতে পেরে লাশ উত্তোলন করে আসামিদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনা তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতের চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার ১৩ বছর পরে দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অপর ধারায় ওই একই আসামিদেরকে হত্যা মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া হত্যার আলামত নষ্ট করার অভিযোগে দুই আসামিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। এই রায়ের ফলে এই ধরনের সামাজিক অপরাধ কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।